জেলা প্রতিনিধি
২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫১ এএম
বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ড মুয়ালপি পাড়ার লোকজন পাড়া ছেড়ে প্রাণ ভয়ে ৪ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে উপজেলা সদরে আশ্রয় নিয়েছেন।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুন শিবলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মুয়ালপি পাড়ার কার্বারি (গ্রাম প্রধান) সানা অং মারমা জানান, শুক্রবার থেকে কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সাথে সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলছে। সেজন্য তার পাড়ার ৫২ পরিবারের মধ্যে ৪০ পরিবার রুমা মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে আশ্রয় নিয়েছেন। আর পাড়ার বাকি ১২ পরিবার কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন এই মুহুর্তে বলতে পারছেন না। বেলা ২টা থেকে রওনা দিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় রুমা সদরে পৌঁছান বলে জানান তিনি।
পাইন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা জানান, মুয়ালপিতে ৫২ পরিবারের মধ্যে ৪৫ পরিবার মারমা। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রুমা সদরে ২২ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী ও ৪ শিশু প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসেছেন। তাদেরকে রুমা মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হলরুমে খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান তার ইউনিয়নে মুয়ালপি পাড়া, আর্থা পাড়া, প্রাংসা পাড়া, ইলি চান্দা পাড়া, ক্যকটাই পাড়া, ঞ্যোংক্ষ্যং পাড়াসহ প্রায় ১২টি পাড়ার লোকজন ৩দিন ধরে আতঙ্কে নিজেদের পাড়া ছেড়ে বিভিন্ন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে।
রুমা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মামুন শিবলী জানান, মুয়ালপি পাড়ার ২২ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী ও ৪ জন শিশু রুমা মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা পরিষদ থেকে কম্বল দেওয়া হয়েছে। পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদ ও আশ্রমের ভান্তে তাদেরকে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন প্রায় ১২টি পাড়ার লোকজন প্রাণভয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাড়া (গ্রাম) ছেড়ে পালিয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবর থেকে রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় কুকিচিন ন্যশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জঙ্গীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলছে।
গত ১২ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানিয়েছিলেন কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুর্গম এলাকায় কেএনএফকে মাসিক তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে নতুন জঙ্গী সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, র্যাব বান্দরবানে ১২জন জঙ্গী আর বিভিন্ন সময় ১৪জন কেএনএফ সক্রিয় নেতা সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। কুকিচিনের সশস্ত্র সদস্য সংখ্যা দুশতাধিক হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিনিধি/এসএস