জেলা প্রতিনিধি
২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:২৮ পিএম
বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২৫ জানুয়ারি ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির জন্মস্থান কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে সপ্তাহব্যাপী শুরু হচ্ছে মধুমেলা। এ মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়িকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখ লাখ মধুভক্তের উপস্থিতিতে এবার মুখরিত হয়ে উঠবে মেলা প্রাঙ্গণ। কবির জন্মভূমির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বুড়ো কাঠবাদাম গাছ তলা, বিদায় ঘাট, মধুপল্লীসহ মেলা প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে দর্শনার্থীরা। মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এলাকার মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
জানা গেছে, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী এ মধুমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রধান অতিথি হিসেবে মধুমেলার উদ্বোধন করবেন।
দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা প্রাঙ্গণের মধুমঞ্চে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুকূপ থাকছে। রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়াও থাকছে কৃষিমেলা।
সরেজমিনে দেখা যায়, করোনার কারণে গত দুই বছর সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এবারের মেলা ঘিরে সবার মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। যশোর শহরসহ কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মধুমেলার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্যান্ডেলসহ শিশু বিনোদনের সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্থানীয় দোকানদারদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজাচ্ছেন।
মধুমেলা শুরুর আগেই মেলা প্রাঙ্গণের প্রস্তুতি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন অসংখ্য মানুষ।
উপজেলার বুড়িহাটি গ্রামের আব্দুস সালাম মুর্শিদী বলেন, বন্ধু-বান্ধবদের মেলার প্রস্তুতি জানাতে তিনি সাগরদাঁড়ি এসেছিলাম। অনেকেই এখানে মেলার প্রস্তুতি দেখতে এসেছেন।
এদিকে সাগরদাঁড়ি এলাকাসহ আশপাশের গ্রামে গ্রামে মেলা দেখতে আত্মীয়-স্বজন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের দাওয়াতও দিয়েছেন। সাগরদাঁড়ির আলোকচিত্র শিল্পী মুফতি তাহেরুজ্জামান তাছু বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে মহাকবির জন্মবার্ষিকীতে মধুমেলা হয়নি। এবারের মেলায় লাখ দর্শনার্থী ও মধুপ্রেমীদের সমাগম ঘটবে। ইতমধ্যে এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এসেছে। প্রত্যেকটি বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান মো. হাসানুজ্জামান বলেন, মধুমেলা উপলক্ষে মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীরা মধুপল্লীতে কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতিবিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখতে পারবেন।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মধুমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এ মেলার উদ্বোধন করবেন। মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীগোষ্ঠীর পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন।
তিনি আরও বলেন, এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক প্রদান করা হবে। আশা করছি সফল ও সুন্দরভাবে ঐতিহ্যবাহী মধুমেলা সম্পন্ন হবে।’
প্রতিনিধি/এসএস