images

সারাদেশ

ছেলের চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান বাবা

জেলা প্রতিনিধি

০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:২৪ পিএম

অনিক ইসলাম। বয়স মাত্র ১৪ বছর। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার তালপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। চার মাস আগে প্রতিবেশির ঘরের টিনের চাল ঠিক করতে  উঠলে বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয়। সেই বৈদ্যুতিক শকে প্রাণ না গেলেও মারাত্মক পঙ্গু হয়ে অসহায় জীবন পার করছে অনিক।

সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পূর্ব নারগুন গ্রামের দিন মজুর মো. আব্দুর রহিমের বড় ছেলে অনিক। যে বয়সে স্কুলের সহপাঠীদের সঙ্গে পড়াশোনা আর খেলাধুলা করার সময়। সেই বয়সে মারাত্মক দুর্ঘটনায় মাথার এক অংশ ও গলার এক পাশ পুড়ে যায়। পায়ের আঙ্গুলে আঘাত পাওয়ায় সেটিও চিকিৎসকের পরামর্শে কেটে ফেলতে হয়েছে। এতে দুর্বিষহ জীবন পার করছে অনিক। ঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না,  ঘাড় নাড়াতে পারে না। এমনকি স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা সবই বন্ধ।

ইতোমধ্যে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় করেছেন তার দরিদ্র বাবা। চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না পরিবারটি। তাই সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানসহ প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান তার বাবা মো. আব্দুর রহিম।

আব্দুর রহিম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘তার চার সদস্যের পরিবার। দিন মজুরি দিয়ে হলেও ভালই চলছিল সংসার। তার বড় ছেলে অনিক ইসলাম পঞ্চম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলে নিরব ইসলাম প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। একদিন তার প্রতিবেশি অনিককে তার ঘরের টিন ঠিক করার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। টিন ঠিক করতে উঠলে অনিক বিদ্যুতায়িত হয়। তাৎক্ষণিক অনিককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তার চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসা করে কিছুটা সুস্থ হলেও পঙ্গু হয়ে গেছে। তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে অনেক টাকার প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, এতোদিন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় চিকিৎসা করেছি। বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। নিজের আয় দিয়ে সংসার চালাব না ছেলের চিকিৎসা করাব? তাই আমি সমাজের বিত্তবান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আকুল আবেদন জানাচ্ছি। অর্থ সহায়তা পেলে হয়তো আমার ছেলেটা আগের মতো সব কিছু করতে পারবে।’

প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুস, নূর মোহাম্মদ, আবুল কাশেম ও তাসিমা বেগম জানান, বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয় অনিক। এতে তার চিকিৎসা করাতে তার পরিবারের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তার বাবা একজন দিন মজুর। দিনে আনে দিনে খায়। সে সংসারের খরচ চালাবে না ছেলের চিকিৎসা করাবে। তাই সরকার যদি তার ছেলের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য করতো তাহলে ছেলেটি সুস্থ হয়ে হয়তো আগের মতো সুন্দর জীবনযাপন করতে পারতো।

সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে আগের মতো স্কুলে যাওয়া ও খেলাধুলা করার জন্য সমাজের বিত্তবান এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের আকুল আবেদন অনিকেরও।

সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, অনিকের চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস