জেলা প্রতিনিধি
২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০২ পিএম
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের বোচাপুকুর এলাকায় সুগার মিলের খেজুর বাগানের গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে প্রাকৃতিক পরিবেশে গাছিরা তৈরি করছে গুড়। প্রতিদিন বাগানের সাতশ গাছ থেকে প্রায় এক হাজার লিটার খেঁজুরের রস সংগ্রহ করছেন তারা।
ইতোমধ্যে খেজুরের রস ও রস দিয়ে তৈরি করা গুড় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ। প্রাকৃতিক পরিবেশে গুড় তৈরির দৃশ্য দেখতে, রস ও গুড় নিতে স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শত শত ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন এখানে। রসের স্বল্পতার কারণে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপাদন হচ্ছে না গুড়।
গত বছর খেজুর বাগান ৪০ হাজার টাকায় রাজশাহী জেলার গাছিরা লিজ নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার বাগানটি সুগার মিল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এক বছরের জন্য ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছেন স্থানীয় দুই যুবক।
শীত কম হওয়ায় গাছ থেকে রস কম বের হয়। বর্তমানে সাতশত গাছ থেকে দিনে ১ হাজার লিটার রস বের হচ্ছে। শীত বেড়ে গেলে এ বাগান থেকে দিনে ৩ হাজার লিটার রস সংগ্রহের আশা করছেন বাগান লিজ নেওয়া মো. আল আমীন।
মো. আল আমীন বলেন, এখানে নির্ভেজালভাবে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। তাই এখান থেকে প্রচুর মানুষ রস ও গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ভোর রাত থেকে সারাদিনে অনেক মানুষের ভিড় হয়। মানুষের এমন ভিড় থেকে অনেক ভালো লাগে। আমরা আনন্দিত।
নাটোর জেলার লালপুর থেকে খেঁজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির করার জন্য এসেছেন আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে গাছের ছাল কেটে হাড়ি টাঙানোর কাজ দুপুর পর্যন্ত চলে। আর এই হাড়িতে ফোটায় ফোটায় রস জমতে থাকে। পরে সেই হাড়িগুলো রাত ৩টা থেকে গাছ থেকে নামানো হয়। হাড়ি ভর্তি সেই রস দিয়ে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। এখানে দুই প্রকার গুড় তৈরি করা হয়। একটি স্থানীয় ভাষায় ঢিকা গুড় ও লালি গুড়, যা তরল গুড় বলা হয়। গুড় প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে এবং খেঁজুরের রস প্রতি লিটার ৮০ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার গুড় ও রস খুবই সুস্বাদু। তাই দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে আসেন রস ও গুড় কিনতে।
লিটন আহম্মেদ নামে একজন যুবক দিনাজপুর থেকে এসেছেন গুড় কিনতে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। সেখানকার বস আমাকে খেঁজুরের গুড় নিয়ে যেতে বলেছেন। তাই আমি এখানে গুড় কিনতে এসেছি।
এই খেঁজুর বাগানটি দর্শনীয় জায়গায় পরিণত হচ্ছে। এটিকে বিকশিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে বলে জানালেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান।
প্রতিনিধি/এইচই