জেলা প্রতিনিধি
২৯ নভেম্বর ২০২২, ০১:২৩ পিএম
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক সঙ্গে বাবা-ছেলে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। বাবা ইমামুল ইসলাম জিপিএ ৪.৭৯ এবং ছেলে আবু রায়হান জিপিএ ৪.৮২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর রাতে এ তথ্য জানা যায়।
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চকতকিনগর এলাকার বাসিন্দা এই বাবা-ছেলে।
দু’জনই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেন। বাবা ইমামুল ভোকেশনাল শাখার ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের এবং ছেলে রায়হান জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ট্রেডের ছাত্র ছিলেন। এক সঙ্গে পাস করায় বাধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন তারা। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বাবা ইমামুল ইসলাম জানান, ২৪ বছর আগে পড়ালেখা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রায় ১৮ বছর গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন। সেই সময় সংসারের অভাব অনটনের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ৮ম শ্রেণি পাশের পরে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি তার অনেক আগ্রহ ছিল। ২০১৬ সালে সেই কাজ ছেড়ে বাগাতিপাড়ায় বাড়ি ফিরে আসেন। জমানো টাকা দিয়ে গ্রামে এসে মওসুমে ফলের ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশে একটি ছোট্ট মুদির দোকান দেন। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মনোবলের কারণে শিক্ষা গ্রহণে আবারও ইচ্ছা জাগে তার। সমাজে আর দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়তে চান তিনি। অবশেষে ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এবছর তার ছেলে ও তিনি এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেন এবং দুইজনই পাস করেন।
ছেলে আবু রায়হান বলেন, ‘শিক্ষার কোনো বয়স নেই, আমার বাবা তা প্রমাণ করেছেন। আমি অনেক আনন্দিত। একই সঙ্গে আমার বাবা এবং আমি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছি।’
আবু রায়হান আরও বলেন, ‘আমার বাবা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান। বাবা-ছেলে দু’জনই পড়ালেখা চালিয়ে যাবো। আমার বাবা পাস করায় আমাদের আত্মীয় স্বজন ও বাবার বন্ধুরা অনেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে। বিষয়টা আমার খুব ভালো লেগেছে।’
টিবি