images

সারাদেশ

জিপিএ-৫ পেয়েছে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দেওয়া জারিফ

জেলা প্রতিনিধি

২৯ নভেম্বর ২০২২, ১২:৪৪ পিএম

নীলফামারী সদর উপজেলায় বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া সেই আব্দুল্লাহ মোক্তাদির জারিফ এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর রাতে এ তথ্য জানা যায়।

জেলা শহরের নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় জারিফ। সে সদর উপজেলা গোড়গ্রাম ইউনিয়নের মাঝ পাড়া গ্রামের মৃত. মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে জারিফের বাবা মাহাতাব উদ্দিন কিডনিজনিত রোগে মারা যান। এ সময় তার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছিল। ১৫ সেপ্টেম্বর তার বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর ভেঙে পরেছিলেন জারিফ। একদিকে যখন স্বজনরা নিয়েছে বাবার লাশ দাফনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে শোকে কাতর হয়ে সেদিন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছিল আব্দুল মোক্তাদির জারিফকে। তবে বাবা মারা গেছেন এটি বুঝতে দেয়নি সহপাঠী বা শিক্ষকদের। পরীক্ষা শেষে এসে বাবার লাশ দাফন করে জারিফ। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে নীলফামারীর জেলা প্রশাসকের নজরে আসে।

jarif

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে খবরটি শুনে সদর উপজেলার গোড়গ্রাম মাঠপাড়া মাদ্রাসা এলাকার জারিফের নিজ বাসায় গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। ওই সময় ভবিষ্যতে যেকোনো সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।

জারিফের বড় ভাই জামিল হোসেন বলেন, ‘ওর রেজাল্টে আনন্দিত, তবে আমার বাবা থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতো। তার জন্য সৈয়দপুর টেকনিক্যাল কলেজসহ দেশের ভালো মানের প্রতিষ্ঠানে চয়েস দিবো। ইনশাআল্লাহ ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়ে সে ভালো কিছু করবে।’

জারিফের মা জোলেখা খাতুন বলেন, ‘জারিফ যেমন জিপিএ-৫ পেয়ে আনন্দিত হয়েছি। কিন্তু ওর বাবাকে হারিয়ে তেমনি কষ্টে আছি। তবে এই আনন্দ কিছুটা সেই কষ্ট ঘুচিয়েছে। ওর বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হত। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, জারিফের এমন রেজাল্টে আমরা আনন্দিত। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিয়েও সে এমন রেজাল্ট করেছে এতে আমরা গর্বিত। তাছাড়াও সে এমনিতেই অনেক মেধাবী ছাত্র।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, জারিফ এমন সাফল্যে আমি অনেক আনন্দিত। আসলে জারিফ একজন মেধাবী ছাত্র। সে ভবিষ্যতে বড় কিছু করতে পারবে। ভবিষ্যতে তার যে কোনো সহযোগিতায় আমি থাকব ইনশাআল্লাহ।

টিবি