গোপালগঞ্জে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতন

কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় শিল্পী বেগম (২২) নামে এক বাকপ্রতিবন্ধী গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিতা ওই নারী গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের উত্তর ফলসি গ্রামে বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। 

গৃহবধূ শিল্পী ওই গ্রামের ভ্যানচালক কাশেম শেখের মেয়ে। অর্থাভাবে নির্যাতনে আহত মেয়েকে চিকিৎসা করাতে পারছেন না দরিদ্র বাবা কাশেম শেখ। 

নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামের মৃত বকুল গাজীর ছেলে ইয়াদ আলীর সঙ্গে শিল্পীর বিয়ে হয়। প্রথমদিকে ভালই চলছিল তাদের সংসার। এক বছর পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য ও কারণ-অকারণে শিল্পীকে নির্যাতন করেন জামাতা ইয়াদ আলী ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগও দিয়েছিলেন শিল্পীর বাবা। পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে মিমাংসা করে দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন শিল্পী। এরপর থেকে শিল্পীর ওপর বেড়ে যায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন। 

শিল্পীর বাবা কাশেম শেখ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিছুদিন পর থেকে আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। প্রায়ই নানা কারণে আমার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তিন মাস আগে একটা মেয়ে হওয়ায় আরও বেশি নির্যাতন করছে। আমার মেয়েকে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত করেছে। মুখের ভিতর হাত ঢুকিয়ে নির্যাতন করেছে। আমার মেয়েকে জানে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়। আমি গরীব মানুষ ভ্যান চালাই খাই। আইন-আদালত করতে টাকা লাগে, আমি কোথায় পাব। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।’

এ ঘটনায় কাশেম শেখ বাদী হয়ে সদর থানার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইয়াদ আলী গাজীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আছাদুজ্জামান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রতিনিধি/এইচই