জেলা প্রতিনিধি
০৯ আগস্ট ২০২২, ১১:১৭ এএম
উন্নত জীবনের আশায় গ্রিস থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তাপস সরকার নামে সুনামগঞ্জের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাগউচা গ্রামের মৃত সতীশ চন্দ্র সরকার ও জোছনা রানী তালুকদারের বড় ছেলে তাপস। ছাতকে তিনি তার স্বজনের মুদি দোকানের পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন এবং ছাতক শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন বলে জানা গেছে।
তাপসের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কোভিড মহামারির ৬ মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে অবৈধভাবে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে চলে যান তিনি। সেখান থেকে গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক দালালের মাধ্যমে চুক্তি করেন গ্রিস থেকে সার্বিয়া যাওয়ার কথা ছিল। পরে সার্বিয়া থেকে অন্য দালালের মাধ্যমে যাবেন ইতালি।
>> আরও পড়ুন: হলুদের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে কনেসহ ৬
এ রুটে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়া প্রবেশ করান। পরে আলবেনিয়ায় ২ থেকে ৩ দিন রেখে সুযোগ বুঝে মন্টিনিগ্রো নিয়ে যান। মন্টিনিগ্রো নিয়েই আটকে রেখে চুক্তি করা অর্থ আদায় করেন। টাকা পরিশোধ হলে নিয়ে যান সার্বিয়া অথবা বসনিয়ায়। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানো হয়ে থাকে।
সেই চুক্তি অনুযায়ী গত ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে তাপসসহ প্রায় ৩০ জনের একটি ‘গেইম’ দলকে নিয়ে আলবেনিয়া পৌঁছায় দালাল চক্র। আলবেনিয়া স্থল সীমান্ত থেকে তীব্র গরমের মাঝে ৮ ঘণ্টায় উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনিগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটিয়ে পড়েন তাপস। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্য যাত্রীরা তাকে রেখেই চলে যান। তার সঙ্গে থাকা পরিচিত দুইজন অনেক চেষ্টা করে তার কোনো সাড়া না পেয়ে তারাও চলে যান। তবে তারা ওই ঘটনার একটি ভিডিও করে গ্রিসে থাকা স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
>> আরও পড়ুন: ছেলের ফোনে ভিডিও দেখে ড্রাগন চাষ, সেই বাগান দেখতে জনতার ভিড়
নিহত তাপস সরকার এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। সুমন সরকার নামে তার এক ছোট ভাই আছে। সুমন সরকার জানায়, তার ভাই তাপস গ্রিস থেকে ইতালি যেতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে সে মারা যায়। ফেসবুকে ভিডিও দেখে মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত হন স্বজনরা।
তাপস সরকারের কাকা জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল সরকার বলেন, তাপস আনুমানিক আড়াই বছর আগে বিদেশ যায়। ৭ আগস্ট তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত তাপসের ছবি দেখে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হন।
জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী জানান, এলাকার একজন ছেলে গ্রিস যাওয়ার পথে মারা গেছে এমন খবর তিনি শুনেছেন। তবে বিস্তারিত জানেন না।
প্রতিনিধি/এএ