images

সারাদেশ

নওগাঁয় কমেছে আন্তঃজেলা-দূরপাল্লার বাস চলাচল

জেলা প্রতিনিধি

০৬ আগস্ট ২০২২, ০৬:৩৪ পিএম

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নওগাঁয় বেশির ভাগ মালিকেরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। এতে নওগাঁ থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। অল্প কিছু বাস চালু থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে লোকসানের আশঙ্কায় বাস মালিকেরা বাস বন্ধ করেছেন। যেসব বাস চলছে, সেগুলোতে এখনো আগের ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে। মালিকেরা বাসের নতুন ভাড়া নির্ধারণের অপেক্ষা করছেন।

শনিবার শহরের বালুডাঙ্গা ও পার-নওগাঁ ঢাকা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ে এসব টার্মিনালে বাস ও যাত্রীদের ভিড় থাকলেও সকাল থেকে টার্মিনালগুলো অনেকটাই ফাঁকা। অনেক বাস টার্মিনালের ভেতরে রাখা আছে। আন্তঃজেলা রুটে প্রতি ঘণ্টায় দুই থেকে তিনটি বাস ছাড়া হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটিও কমতে থাকে। দূরপাল্লার বাসগুলো সংখ্যায় বেশি থাকলেও সেটিও তুলনামূলক অনেক কম। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। বেশি ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে অনেকে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

নিয়ামতপুর যাওয়ার জন্য বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনাল দুই ঘন্টা থেকে অপেক্ষা করছিলেন সাজেদুর রহমান নামের এক যুবক। তিনি বলেন, ‘রাতে যখন জানলাম, তেলের দাম বেড়েছে, তখন ভেবেছিলাম, বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। তবে বাস চলাচলই যে বন্ধ থাকবে তা ভাবনার বাইরে ছিল।

টার্মিনালে কথা হয় আড্ডাগামী যাত্রী মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। বাস খুবই সীমিত। কীভাবে যাব বুঝতে পারছি না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহাদেবপুর, নজিপুর, ধামইরহাট, সাপাহার রুটে মাত্র ২০টি বাস চলাচল করেছে। অন্যান্য দিন এসময়ে এই রুটে অন্ত্যত ৬৫-৭০টি বাস চলাচল করে। দুপুর পর্যন্ত নওগাঁ-রাজশাহী রুটে ৪০টি বাস চলাচল হলেও আজ মাত্র ২৩টি বাস চলাচল করেছে। এছাড়া একই সময়ে নওগাঁ-আড্ডা-নিয়ামতপুর, চৌবারিয়া রুটে একটি বাসও চলাচল করেনি। যেখানে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই রুটে ৬০টি বাস চলাচল করে।
naogaon busএদিকে পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধে বিপদে পড়েছেন বাস শ্রমিকেরা। 

বাস বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাউন্টার মাস্টার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বেশির ভাগ বাসমালিকেরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। কারণ, ভাড়া না বাড়িয়ে বাস চালালে অনেক লোকসান হবে।

ওই টার্মিনালের চেইন মাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, যে রুটে দুপুর পর্যন্ত ১০০ বাস চলাচল করার কথা সেখানে ২০টা চলাচল করছে। এছাড়া আড্ডা-নিয়ামতপুরে দুপুর পর্যন্ত একটি বাসও চলাচল করেনি। যাত্রীরা এসে ঘুরে যাচ্ছেন। বেশি ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে অনেকে গন্তব্যে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো আর বেশি ভাড়া নিতে পারবো না।

বাস চালক রুবেল হোসেন বলেন, নওগাঁ থেকে পোরশাতে আগের ভাড়া ১১০ টাকা ছিল। এখন ১৫০ টাকা না হলে তেলের খরচই উঠবে না। বাস চললে মালিককে টাকা দিতে হবে। এজন্য অনেকেই বাস বন্ধ রেখেছে।

এবিষয়ে নিউ খান বাসের মালিক মুক্তা খান বলেন, এখন খরচ মেটাতে ভাড়া বাড়াতে হবে। লোকসান দিয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। ভাড়া পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত কেউ গাড়ি চালাবে না।

নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল মোস্তফা কালিমী বাবু বলেন, আগের ভাড়া অনুযায়ী গাড়ি চালালে লোকসান হবে। তারপরও জনগনের স্বার্থে কিছু বাস চলানো হচ্ছে। ঢাকায় ভাড়া নির্ধারণ বিষয়ে মিটিং হবে। ভাড়া না বাড়লে কাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রতিনিধি/এএ