images

সারাদেশ

গুচ্ছ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সেই তামান্না

জেলা প্রতিনিধি

৩০ জুলাই ২০২২, ০৯:২০ পিএম

প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে এক পায়ে যুদ্ধ জয় করে চলা তামান্না আক্তার নুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। শনিবার (৩০ জুলাই) যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অ্যাকাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

অদম্য মেধাবী তামান্নার এই সাফল্যে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে তারা দুই বোন তামান্নার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসেন। তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছিলেন জাতির জনকের দুই কন্যা। 

অদম্য মেধাবী তামান্নার বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে। তামান্নার এক পা-ই সম্বল। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটি পা নেই। জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করে চলেছে তামান্না। 

তামান্না পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে, এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তামান্নার বাবার নাম রওশন আলী। মায়ের নাম খাদিজা পারভীন শিল্পী। বাবা স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদরাসার (নন এমপিও) বিএসসির শিক্ষক। মা গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়।

তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, ছোটবেলা থেকে তামান্না খুব মেধাবী। নিজের ইচ্ছাশক্তির জোরেই সে এই জায়গায় এসেছে। সবকটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার স্বপ্ন গবেষণাধর্মী কোনো বিষয়ে লেখাপড়া করে বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকুরে হওয়া।

স্বপ্ন পূরণে কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল তামান্না। দুর্ভাগ্য, সেখানে ওর চান্স হয়নি। শনিবার যবিপ্রবিতে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা ভালো হয়েছে বলে সে জানিয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে রওশন আলী বলেন, আমি একটি নন-এমপিওভুক্ত দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক। সংসার চালাতে টিউশনও করতে হয়। আমার পক্ষে জেলার বাইরে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। মেয়েটা যেখানেই লেখাপড়া করবে ওর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদেরও থাকতে হবে। কোনো একজনের সহযোগিতা ছাড়া সে কিছু করতে পারে না। তাই মেয়েরও ইচ্ছা, বাড়ির কাছে নিজ শহরে যবিপ্রবিতে লেখাপড়ার করার।

যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়েছি যে সারাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষাটি অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। যবিপ্রবি কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা তার প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করেছি।
প্রতিনিধি/এইচই