জেলা প্রতিনিধি
৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩১ এএম
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট আমলি আদালতে এক ব্যক্তি নিজেকে বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে আসামি রাকিব বেপারীর জামিন করানোর চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় তার পরিচয় যাচাই করা হলে ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং তাকে পুলিশ আটক করে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে মিজানুর রহমান নামের ওই ব্যক্তি গোসাইরহাট আমলি আদালতে উপস্থিত হন। তিনি নিজেকে একজন বিচারপতির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দায়িত্বরত বিচারকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সি.আর-৫২৪/২৫ (গোসাইরহাট) নম্বর মামলার ১নং আসামি রাকিব বেপারীর জামিন দিতে চাপ সৃষ্টি করেন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি আদালতের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে মামলার কাগজপত্র এবং আইনজীবীর স্বাক্ষরযুক্ত জামিন দরখাস্ত নিয়মবহির্ভূতভাবে বিচারকের কাছে উপস্থাপন করেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় দায়িত্বরত বিচারক সংশ্লিষ্ট বিচারপতির মোবাইল নম্বরে ফোন করে পরিচয় যাচাইয়ের চেষ্টা করেন। তবে একাধিকবার ফোন করেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিস্থিতি আরও সন্দেহজনক হয়ে উঠলে বিচারক বিষয়টি কোর্ট পুলিশকে অবহিত করেন। কোর্ট পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকার করেন, তিনি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা এবং ঢাকায় স্বাস্থ্য বিভাগে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত। তিনি জানান, মামলার আসামির বড় ভাইয়ের অনুরোধে তিনি বিচারপতির পরিচয় ব্যবহার করে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।
ঘটনার সময় আদালতের বেঞ্চ সহকারী, স্টেনোগ্রাফার, অফিস সহায়কসহ একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন এবং তারা পুরো ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন।
শরীয়তপুর জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন ও বিচারিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়। পরে তাকে পালং মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, 'আদালত থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো এজাহার পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি বর্তমানে থানার হেফাজতে রয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টি রেকর্ডভুক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'