জেলা প্রতিনিধি
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। শহরের প্রবেশপথ, মহাসড়ক, পর্যটন এলাকা ও আবাসিক জোনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রোবায়েত হোসেন জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথে সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কেউ যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে কোনো নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর সামগ্রী বহন করতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনে যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। শহরে প্রবেশ ও বের হওয়া প্রতিটি গাড়ি নিবিড় নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে বাস টার্মিনাল ও পর্যটন এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
রামু ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছির উদ্দিন বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে। সড়কপথে আগত পর্যটক ও সাধারণ মানুষ যাতে স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারে, সে লক্ষ্যে মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সৈকত, হোটেল জোন, পর্যটন স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার হলে দ্রুত নিকটস্থ পুলিশকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।”
এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ৭ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করে বার্তা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকলকে এসব বিধি-নিষেধ অনুসরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আরোপিত বিধি-নিষেধসমূহ
১. কক্সবাজার শহর ও সমুদ্র সৈকত এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দুর্ঘটনা এড়াতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে।
২. উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট, নাচ বা গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।
৩. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সব বার ও মদের দোকানে কেনাবেচা বন্ধ থাকবে।
৪. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. উচ্চশব্দে গাড়ির হর্ন বাজানো, প্রতিযোগিতা (রেসিং), জয় রাইড এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ।
৬. নারী পর্যটকদের কোনো ধরনের ইভটিজিং বা উত্ত্যক্ত করা যাবে না।
৭. আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে হোটেল-মোটেলগুলোতে আয়োজিত ইনডোর অনুষ্ঠানের তথ্য এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিষয়ে জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি)-কে অবহিত করতে হবে।
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বিধি-নিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/একেবি