জেলা প্রতিনিধি
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
আসন্ন ত্রাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে রাজশাহীর ৬টি আসনে মোট ৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন। এ সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বিএনপির প্রার্থীরা। অন্যদিকে, জামায়াতের প্রার্থীরা বেশ কিছু বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেন।
জানা গেছে, রাজশাহীর ৬টি সংসদীয় আসনে এবার মোট ৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ৬ জন, রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ৯ জন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে ৭ জন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে ৪ জন, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে ৮ জন এবং রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে ৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
সোমবার বিকেলে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু। রাজশাহী-২ (সদর) আসনে তিনি বিএনপি মনোনীত 'ধানের শীষ' প্রতীকের প্রার্থী। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মিজানুর রহমান মিনু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশা করছি এই নির্বাচন অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হবে। রাজশাহীর মানুষ সবসময়ই শান্তিপ্রিয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, রাজশাহীর ৬টি আসনেই অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবে।’
মিনু আরও বলেন, ‘আমরা এখানে সবাই ভাই ভাই। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। রাজশাহী শান্তির মহানগরী; ২০০৪ সালে এটি বিশ্বের সবচেয়ে সুখী শহর হিসেবে মর্যাদা পেয়েছিল। রাজশাহীবাসী সেই মর্যাদা অতীতেও রক্ষা করেছে, ভবিষ্যতেও রাখবে। আমি বিশ্বাস করি, প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে এবং জাতীয়তাবাদী দল 'ধানের শীষ' নিরঙ্কুশ জয়লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো আছে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
এদিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমানও মনোনয়নপত্র জমা দেন। তিনি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সবার জন্য সমান সুযোগ নেই বলে অভিযোগ তোলেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। এছাড়া ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জামায়াতের অন্যান্য নেতারা। এ সময় প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন ও সমান নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির দাবি জানান তিনি।
এদিকে দুপুরে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমিরে জামায়াতের নির্দেশে আমরা আমাদের দলের সব পোস্টার-ফেস্টুন সরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দল এখনো তা করেনি। এখনো ধানের শীষের প্রার্থীর পোস্টার ঝুলছে এবং তিনি নির্বাচনী সভা করে যাচ্ছেন।’ এ সময় তিনিও প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
প্রতিনিধি/একেবি