জেলা প্রতিনিধি
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার এবং ২৫ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘বিপ্লবী মঞ্চ শেরপুর’।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে শেরপুর পৌর শহরের শহীদ স্কয়ারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সমাবেশ চলাকালীন নেতাকর্মীরা ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘জুলাইয়ের হাদি ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’, ‘শহীদ হাদি আজাদি, ওসমান হাদি আজাদি’ ইত্যাদি স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক অগ্রসেনানি এবং ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার রূপকার। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে এখনো ফ্যাসিবাদী শক্তি লুকিয়ে আছে, যারা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে বা নমনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
তারা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হাদি ছিলেন সবচেয়ে বড় হুমকি।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যারা আজ কেবল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত, তাদের মনে রাখা উচিত হাদি হত্যার বিচার ও খুনি ফয়সাল চক্রকে গ্রেফতার করা না হলে এই সরকার কাউকেই নিরাপত্তা দিতে পারবে না। খুনিরা পালিয়ে যাওয়ার খবর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশি সাংবাদিকরা দিলেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১৬ দিন পর তা জানতে পারে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
তারা কেবল মূল খুনি নয়, বরং এই হত্যাকাণ্ডের অর্থ জোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। বিপ্লবী মঞ্চ শেরপুরের আহ্বায়ক আরাফাত রহমান তালুকদার সরকারের কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো—
১. শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মূল খুনি ও জড়িত চক্রকে দ্রুত গ্রেফতার করে ২৫ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে। ২. নির্বাচনের আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসর ও বিদেশি গুপ্তচরদের চিহ্নিত করে সংস্কার করতে হবে। ৩. বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল ভারতীয় নাগরিকের ওয়ার্ক পারমিট পুনর্মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে বাতিল করতে হবে। ভারত যদি তার ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া খুনিদের ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তবে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। ৪. দেশবিরোধী ও বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিপ্লবী মঞ্চ শেরপুরের সদস্য সচিব নাহিম আহমেদ নিলয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জুলাই যোদ্ধা রুমান মোল্লা, সেলিম মিয়া ও মাজহারুল ইসলাম বিজয়। বিক্ষোভে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার মুখ্য সংগঠক মোর্শেদ জিতু, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মনিবুল ইসলাম, নালিতাবাড়ীর আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী আলমগীর ও রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
প্রতিনিধি/একেবি