জেলা প্রতিনিধি
২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৪ পিএম
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতিতে ২০২৫ সালের জুনিয়র (দাখিল অষ্টম শ্রেণি) বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না চৌদ্দগ্রাম ফয়েজুন্নেছা মহিলা মাদরাসার কোমলমতি ১১ শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে মাদরাসা অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিক্ষুব্ধ ও বঞ্চিত শিক্ষার্থীরাসহ সচেতন অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সারাদেশে জুনিয়র (দাখিল অষ্টম শ্রেণির) বৃত্তি পরীক্ষা একযোগে শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এবার প্রায় সব মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির শত শত শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। চৌদ্দগ্রাম নজমিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় আর সবার সঙ্গে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল পৌরসভাধীন ফয়েজুন্নেছা বালিকা মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরও। কিন্তু পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে গিয়ে ওই মাদরাসার বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ফেরত আসে নিজ বাসায়। বৃত্তির রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরণ সংক্রান্ত অনলাইনে সাবমিট জনিত ভুলের কারণে এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির ফলে আগ্রহীরা পরীক্ষা দিতে পারছে না। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকদের। সবার মতো তাদেরও ইচ্ছে ছিল বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি মাদরাসা ও পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। বিধিবাম তা আর হলো না। মাদরাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলায় তাদের আশায় গুড়ে বালি। ১১ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হলো। এ ব্যাপারে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগীরাসহ স্থানীয় সচেতন মহল।
আরও পড়ুন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতিতে ১১জন শিক্ষার্থী এবারের বৃত্তি পরীক্ষা দিতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে। পরে কর্তৃপক্ষ বারবার চেষ্টা করেও আমাদেরকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেনি।
এ বিষয়ে দায় স্বীকার করে চৌদ্দগ্রাম ফয়েজুন্নেছা মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ওয়েবসাইটে শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল তথ্য সাবমিটজনিত ভুলের কারণে তারা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। গত ২১ এবং ২২ ডিসেম্বর আমরা বিষয়টি নিয়ে বোর্ডে পর্যন্ত গিয়েছি। কিন্তু অফিসিয়াল নিয়মের কারণে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কিছুটা অসন্তুষ্ট হলেও আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে বলেছি।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে এম মীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি অবহিত নই। চৌদ্দগ্রাম ফয়েজুন্নেছা মহিলা মাদরাসা অধ্যক্ষ বা মাদরাসা কর্তৃপক্ষও আমাকে বিষয়টি জানায়নি। শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস