images

সারাদেশ

শীতে বিপর্যস্ত খুলনা উপকূলের জনজীবন, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

জেলা প্রতিনিধি

২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম

খুলনা মহানগরীসহ উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। হু হু করে বাড়তে শীত। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ঘন কুয়াশায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। শ্রমজীবী মানুষের নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞে ছেদ পড়েছে। ফলে জীবন জীবিকায় টানা পোড়েন সামলাতে শীতকে উপেক্ষা করেই না নামতে হচ্ছে কাজে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় খুলনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

ভোর থেকে ঘন কুয়াশা আর বেলা বাড়লে ঠান্ডা হাওয়ায় শ্রমজীবী মানুষকে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক চালকদের এই পরিস্থিতিতে বেশি বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে।

thumbnail_Screenshot_20251227_084240_Facebook

কুয়াশায় ঢেকে থাকায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে ও সতর্কভাবে চলাচল করতে দেখা যায়।

এদিকে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলের মানুষ বিশেষত নারীরা নদীতে নেমে জাল টেনে মাছ ও কাঁকড়া সংগ্রহ করে। ঠান্ডায় তাদের জীবিকা নির্বাহের এ পথ প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। দিনমজুর শ্রেণির মানুষ, যাদের প্রতিদিনের কাজের ওপর নির্ভর করে চলে সংসারের চাকা, কাজে নামতে বিপাকে পড়ছে তারা। ঠান্ডায় শিশুসহ বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে।

খুলনার কয়রায় ভ্যান চালক মাজেদ সরদার বলেন, শীতের তীব্রতার কারণে সকালে ভ্যান নিয়ে বের হতে পারি না। যাত্রীও কম। অন্য সময় দিনে তিন থেকে চারশ টাকা পর্যন্ত আয় হতো, এখন তা ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নিকলীতে

সুন্দরবন সংলগ্ন ৪ নং কয়রা গ্রামের মুন্ডা নারী আতশী নদীতে জাল টেনে সংসার নির্বাহ করেন। তিনি জানান, সকাল হতে কাঁকড়া ধরতে নদীর চরে হাঁটু পানিতে, কখনো বুক পানিতে নামতে হয়। কিন্তু শীতে এত ঠান্ডা পানিতে নামতে পারি না। দুদিন জাল টানলে ঠান্ডা লেগে অসুস্থ হয়ে পড়ব। বিকল্প আয়ের কোনো উপায় নেই।

ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান কামরুল। তিনি বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ায় মোটরসাইকেল চালানো খুব কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঠান্ডা বাতাসে শরীর অবশ হয়ে আসে, চোখে পানি চলে আসে। তবু কাজের তাগিদে রাস্তায় বের হতে হয়েছে। কুয়াশায় ঠিকমতো দেখা যায় না, ফলে দুর্ঘটনার ভয় থাকে।

thumbnail_Screenshot_20251227_084252_Facebook

অটো ড্রাইভার আশরাফ হোসেন জানান, পেটের দায়ে রাস্তায় নামতে হয়, কিন্তু এখন যাত্রী কম। মানুষ শীতের ভয়ে ঘর থেকে বের হয় না। আগে সারাদিনে যেখানে ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা আয় হতো, এখন ৫০০ টাকা তুলতেই কষ্ট হয়। মহাজনের জমার টাকা ওঠানো কঠিন হয়ে পড়ে।

খুলনা জেলা সহকারী আবহাওয়াবিদ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আজ (রোববার) সকাল ৬টায় খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।

প্রতিনিধি/এসএস