images

সারাদেশ

যশোরে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড, জনজীবন স্থবির

জেলা প্রতিনিধি

২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৩ এএম

যশোরে শীতের দাপট বেড়েছে। পৌষের শুরুতেই কনকনে হাওয়ায় হাড়ে কাঁপন লেগেছে। গত কয়েকদিন ধরে কুয়াশা ও বাতাসের দাপটে পৌষের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শীতের মাত্রা বেড়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ হানা দিয়েছে এ জেলায়।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এ তাপমাত্রা নেমে হয়েছে ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর শীতের দাপটে দুর্ভোগ বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নীলফামারী জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং কোথাও কোথাও তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় ঠান্ডার অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার যশোরে তাপমাত্রা ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষজনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে মানুষজনকে জবুথবু হয়ে পথ চলতে দেখা যায়। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের।

যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪শ’ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়ে থাকেন। প্রচণ্ড শীতে সেই সংখ্যা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে তারপরও কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিছু মানুষ অনেক বেলা অবধি অপেক্ষা করছেন কাজের আশায়।

বাহাদুরপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শীতে একদিন কাজ পাই তো, তিনদিন পাই না। গত এক সপ্তাহ ধরে কাজ হচ্ছে না। শীতের মধ্যে প্রতিদিন ভোরবেলায় এসে বসে থেকেও কোনো লাভ হচ্ছেনা।’

শহরের রায়পাড়া এলাকার রিকশাচালক জোহর আলী বলেন, ‘শীতে রিকশা চালাতে গিয়ে হাত-পা ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে। ব্রেকও ঠিকমতো ধরা যাচ্ছে না। আর বাতাসে মনে হচ্ছে গায়ে ছুঁচ ফোটাচ্ছে।

খড়কি এলাকার রিকশাচালক ইসলাম হোসেন বলেন, ‘গত তিন-চারদিন যে পরিমাণ শীত পড়ছে; তাতে বাইরে রিকশা চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রিকশা না চালালে ভাত জুটবে না; তাই বাধ্য হয়ে পথে নামতে হয়েছে।’

ঝুমঝুমপুর এলাকার রিকশাচালক আব্দুর রহিম জানান, সকাল ৯টা ১০টার আগে রাস্তায় মানুষ আসছে না। আবার সন্ধ্যার পরপরই অনেক মানুষ ঘরে ঢুকে যাচ্ছে। ফলে যাত্রী অনেক কমে গেছে। আয়ও কমে অর্ধেকে নেমেছে।

প্রসঙ্গত, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, ৪ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকের অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

প্রতিনিধি/এমআই