জেলা প্রতিনিধি
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম
হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে বয়ে আসা কনকনে হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়া। গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা যখন চরমে পৌঁছায়, সাধারণ মানুষ যখন লেপ-কাঁথার উষ্ণতায় মগ্ন ঠিক তখনই অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কুয়াশার চাদরে ঢাকা তেঁতুলিয়ার রাস্তায় মানবতার মশাল নিয়ে নামেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু। হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে তিনি ও তার দল রাতভর ছুটে বেরিয়েছেন তেঁতুলিয়া সদর থেকে শুরু করে তিরনইহাট, সিপাইপাড়া হয়ে দেশের শেষ সীমানা বাংলাবান্ধা পর্যন্ত। এছাড়া আজিজনগর, শালবাহান, বুড়াবুড়ি, ভজনপুর ও দেবনগর এলাকার প্রান্তিক মানুষগুলোর কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পরম মমতার উষ্ণতা।
রাতের আঁধারে পথের ধারে কুঁকড়ে পড়ে থাকা ভবঘুরে, ঠিকানাশূন্য মানুষ ও রাতের অতন্দ্র প্রহরী নৈশপ্রহরীদের গায়ে নিজ হাতে কম্বল জড়িয়ে দেন ইউএনও। আকস্মিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন উষ্ণতার ছোঁয়া পেয়ে অনেকের চোখেই আনন্দাশ্রু দেখা যায়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি শীতবস্ত্রের বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় সীমিত হলেও প্রকৃত অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুই শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়।

এ সময় ইউএনও’র সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম. আকাশ, সহকারী প্রোগ্রামার নবীউল কারিম সরকার এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার জিয়াউর রহমান।
রাতের অন্ধকারে সহায়সম্বলহীন শ্রমজীবী ও এতিম শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর এই প্রচেষ্টা স্থানীয় পর্যায়ে ‘জনগণের জন্য প্রশাসন’ স্লোগানটিকে সার্থক করে তুলেছে। প্রশাসনের এমন মানবিক কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ও সন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রতিনিধি/একেবি