images

সারাদেশ

হাতিয়ার জাগলারচরে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত, ৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

উপজেলা প্রতিনিধি

২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১২ পিএম

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকিং ও সুখচর ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীর জাগলারচরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৫ জন নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এই মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত মোবারক হোসেন শিহাবের চাচা এবং নিখোঁজ শামছুদ্দিনের ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে হাতিয়া থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন (মামলা নং- ২১)।

বাদী আবুল বাশার জানান, নিহত ভাতিজার ময়নাতদন্ত ও দাফনকাজ সম্পন্ন করতে দেরি হওয়ায় মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তিনি ঘটনার মূল হোতাদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নিখোঁজ শামছুদ্দিনের স্ত্রী মাহফুজা বেগম অভিযোগ করেন, ‘মনির মেম্বারসহ কয়েকজন আমার স্বামীকে চরে জমি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন খবর পেয়ে আমার ছেলে শিহাব তার বাবাকে ফিরিয়ে আনতে চরে যায়। কিন্তু সেখানে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়। আমি ছেলের লাশ পেলেও স্বামীর খোঁজ এখনও পাইনি। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

নিহত মোবারক হোসেন শিহাব (২৩) সুবর্ণচর উপজেলার সৈকত সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলারচরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলাউদ্দিন বাহিনী ও শামছু বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৭-৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে শামছু বাহিনীর প্রধান শামছুসহ আরও দুইজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা, নিখোঁজদের হত্যা করে চরের কোনো নিভৃত স্থানে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।

 এই সংঘর্ষে নিহতরা হলেন ১. মো. আলাউদ্দিন (৩৬), বানা: মো. মহিউদ্দিন (সুখচর ইউনিয়ন)। ২. মো. মোবারক হোসেন শিহাব (২১), বানা: মো. সামছুদ্দিন (জাহাজমারা ইউনিয়ন)। ৩. হক সাব (৫৫), বানা: মৃত শাহী আলম (হাতিয়া পৌরসভা)। ৪. কামাল উদ্দিন (৩৮), বানা: মৃত সেকু (চানন্দী ইউনিয়ন)। ৫. আবুল কাশেম (৫৭), বানা: জয়নাল আবেদীন (সুবর্ণচর উপজেলা)।

আহতদের মধ্যে মো. সোহরাব (২৫) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। বাকি আহতরা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে এবং নিখোঁজদের সন্ধানে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুততম সময়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিনিধি/একেবি