জেলা প্রতিনিধি
২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৫ পিএম
টানা এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিমা বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের জনজীবন। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আজ বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত হাড়কাপানো শীত জেলার সর্বত্র জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে শীতের প্রকোপ, বৃষ্টির পানি মত ঝড়ছে কুয়াশা। পাকা সড়ক ভিজে গেছে। মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। জীবিকার প্রয়োজনে বের হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। ফলে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১২টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। এতে বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল মানুষরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে কৃষকরা আলুর ক্ষেত ও আগাম ইরি-বোরো রোপণের কাজ করতে গিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
![]()
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম জানান, আজ বুধবার ভোর ৬ টায় জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টাতেও তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকে। গত কয়েকদিনের তুলনায় তাপমাত্রা আজ কম, কুয়াশাও বেশি। হালকা বৃষ্টির মত পড়ছে কুয়াশা।
কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারের জাহিদুল ইসলাম বলেন, শীত যেমন-তেমন আজ ঘন কুয়াশার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে যেমন শরীর ভিজে যায় তেমনই হচ্ছে। এ অবস্থায় বাড়ির বাহির না হলেও আমার মত লোকজনদের জীবিকার তাগিদে বের হতেই হবে। রাস্তায় কোনো লোকজন নেই। তারপরও বের হয়েছি।
জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কে বিআরটিসির বাসচালক মুহিবুল বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা। কুয়াশা কমে না। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। পাবনা থেকে বাসটি মাত্র কয়েকজন যাত্রী নিয়ে জয়পুরহাট পর্যন্ত আসছি। ঠান্ডার কারণে যাত্রী নেই বললেই চলে। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো বাস চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতাল গেটে কথা হয় পাঁচবিবি উপজেলার দানেজপুর গ্রামের আব্দুল বারিকের সাথে। তিনি বলেন, কয়েকদিনের প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে গত রাতে আমার এক প্রতিবেশী ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সকালে হাসপাতালে এসে তাকে ভর্তি করেছি। নিচে ওষুধ নিতে এসেছি। তার শরীরে এখন স্যালাইন চলছে।
![]()
এদিকে, শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে তুলনায় মঙ্গলবার বিকেল থেকে হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আবার অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি গেছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, কয়েকদিনের প্রচণ্ড ঠান্ডার কারনে শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীত বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রতিনিধি/টিবি