images

সারাদেশ

ভাড়াটিয়া চোর নিয়ে গরু চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি

২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম

নেত্রকোনায় হেলাল উদ্দিনের (৫৮) নামে এক কৃষককে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা আক্তার (৪০), সদর উপজেলার নারিয়াপাড়া এলাকার রিয়েল মিয়া (৪০) ও বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়া (৫০)।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত রোববার ভোরে সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামে নিজ ঘরের শয়নকক্ষ থেকে কৃষক হেলাল উদ্দিনের হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাতে স্ত্রীসহ হেলাল উদ্দিন ঘুমিয়ে ছিলেন। স্ত্রী বেদেনা আক্তারের তখন জানিয়েছিলেন- শেষ রাতে তিনি ঘুম থেকে উঠে প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে গিয়েছিলেন। এসে দেখেন হেলাল উদ্দিনকে দুর্বৃত্তরা গলাকেটে হত্যা করে রেখে গেছে।

এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দিন বাদী থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পরে বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রী বেদেনা আক্তারকে আটক করে পুলিশ। পরে তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

নিহত হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার নারিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে।

এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী বেদেনা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম জানান, আদালতে বেদেনা আক্তার জবানবন্দিতে বলেছেন তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ করেছেন। পাওনাদাররা এখন টাকার জন্য তাগদা দিচ্ছেন। তাই তার বাবার বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেন চুরি করে তার স্বামীর হেলাল উদ্দিনের ষাঁড় গরুটির নিয়ে বিক্রি করার জন্য। শনিবার রাতে লিটন মিয়া নারিয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন মিলে গরু চুরি করতে গেলে হেলাল উদ্দিন টের পেয়ে যান। তিনি এতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ, হাত-পা বেঁধে গলা কেটে করে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুন

সোনারগাঁয়ে আাসামিরা হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীর পরিবারে হামলার অভিযোগ

পুলিশ কর্মকর্তা চম্পক দাম বলেন, বেদেনা আক্তারের তথ্য অনুযায়ী গতকাল সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়া ও রিয়েল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় পাঁচটি চুরির মামলা রয়েছে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. আল মামুন সরকার বলেন, অল্প সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনসহ জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। নিহতের স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেফতারের অভিযান চলছে।

প্রতিনিধি/এসএস