জেলা প্রতিনিধি
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
বগুড়ার দুপচাচিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে মাইক্রোবাসের মালিকের বুদ্ধিমত্তায় পুলিশ মাইক্রোবাসের চালককে আটক এবং লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে পুলিশ আদমদীঘি থানাধীন কোমারভোগ গ্রামের একটি রাস্তা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে। এসময় মাইক্রোবাসের পিছনের সিট থেকে পিন্টু আকন্দের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার নাক- মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচানো ছিল। এসময় মাইক্রোবাসের চালক সানোয়ার হোসেনকে (৪০) আটক করা।
নিহতের নাম পিন্টু আকন্দ(৩৮)। তিনি দুপচাচিয়া বাজার এলাকায় লোটো শো- রুমের ব্যবস্থাপক ছিলেন।
নিহতের নাম পিন্টু আকন্দ। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার লৌহচড়া গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি দুপচাচিয়া বাজার এলাকায় চার বছর ধরে বসবাস করেন এবং তার শ্যালক বাবু ও ইলাহীর মালিকানাধীন লোটো এর শো- রুমে ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করতেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে সাদা রঙয়ের এক মাইক্রোবাস দুপচাচিয়া উপজেলা পরিষদ রোডে খন্দকার মার্কেটের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ৩-৪ জন ব্যক্তি নেমে লোটো শো- রুমে প্রবেশ করে ৩-৪ মিনিটের মধ্যেই পিন্টু আকন্দকে টেনে হেঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে তালোড়ার দিকে নিয়ে যায়।
মাইক্রোবাসের মালিক মশিউর রহমান পান্না জানান, সোমবার বিকেলে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজশাহীতে আসামি ধরতে যাওয়ার কথা বলে দুপচাচিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তার গাড়িটি ভাড়া করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার পর ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া ৫-৬ জন দুপচাচিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে মাইক্রোবাসে উঠে সান্তাহার যান।
মাইক্রোবাসের মালিক বলেন, গাড়িটি ভাড়া নেওয়ার পর থেকে আমি জিপিএস এর মাধ্যমে গাড়িটির গতিবিধি পর্যবেক্ষন করতে থাকি এবং সার্বক্ষণিক চালকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখি। মাইক্রোবাসটি সান্তাহার থেকে আবারও দুপচাচিয়া ফিরে আসলে চালককে ফোন করলে তিনি জানান, রাজশাজী যাওয়া বাতিল হয়েছে তালোড়াতে আসামি ধরতে যাবে। এর আগে দুপচাচিয়া থানা থেকে দুইজন পুলিশ সদস্য গাড়িতে উঠবেন। রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাইক্রোবাসে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের দৃশ্য দেখতে পাই। এরপর জিপিএসএর মাধ্যমে দেখি আমার মাইক্রোবাসটি তালোড়া হয়ে নন্দীগ্রাম থানা এলাকা ঘুরে সিংড়া উপজেলার কালিগঞ্জ হয়ে নওগাঁর রানীনগর এলাকা ঘুরে সান্তাহার আসে। সেখান থেকে আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামে গাড়িটি অবস্থান করছে। এসময় চালককে বারবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। ফলে দুপচাচিয়া থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানালে থানার ডিউটি অফিসার জানান, দুপচাচিয়া থানা থেকে কোনো অপহরণের ঘটনা তাদের জানা নেই। কিন্তু গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক এবং চালক ফোন রিসিভ না করায় রাত ১১টার দিকে তিনি জিপিএসএর মাধ্যমে গাড়িটি বন্ধ করে দিয়ে দুপচাচিয়া থানা পুলিশকে ঘটনাটি বিস্তারিত জানান। এর পরপরই সহকারী পুলিশ সুপার আদমদীঘি সার্কেল আসিফ হোসেনের নেতৃত্বে আদমদীঘি ও দুপচাচিয়া থানা পুলিশ আদমদিঘী থানার কোমারপুর গ্রামমুখী রাস্তার ওপর তোফাজ্জল হোসেনের বাসার সামনে থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে। এসময় চালককে আটক ছাড়াও মাইক্রোবাস থেকে পিন্টু আকন্দের লাশ উদ্ধার করে।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার হোসেন বলেন, মাইক্রোবাসের চালকসহ তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনা জানতে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করেছে।
প্রতিনিধি/টিবি