জেলা প্রতিনিধি
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৭ পিএম
অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ার উপকূলের ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক কলেজ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তিন মানবপাচারকারী দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীর নাম রাকিব হোসেন স্বাধীন (২৩)। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের ইসলামপুর ভুতগাছা গ্রামের গোলাম কিবরিয়া ফিরোজের ছেলে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাতি ইউনিয়নের ঘিয়ালা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, তার মেয়ের জামাই মোন্নাফ প্রামানিক (মধ্যবড়হর গ্রাম) এবং মোন্নাফের স্ত্রী সোনিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উল্লাপাড়া থানার এসআই সুমন মাহমুদ জানান, দালাল আবুল কালাম আজাদ ইতালি পাঠানোর প্রলোভনে কলেজ শিক্ষার্থী স্বাধীনকে বিদেশে নেওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ২৫ লাখ টাকা আদায় করেন। পরে চলতি বছরের ২২ মে স্বাধীন বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। তাকে পর্যায়ক্রমে ভারতের চেন্নাই, দুবাই, শ্রীলঙ্কা, মিশর হয়ে সর্বশেষ লিবিয়ায় নেওয়া হয়। এ সময় স্বাধীন আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার পরিবারের কাছ থেকে দুই দফায় আরও ১০ লাখ টাকা আদায় করা হয়। পরে গত ১২ নভেম্বর ১২২ জন অভিবাসীকে একটি ট্রলারে করে লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পাঠানোর চেষ্টা করে দালাল চক্র।
নিখোঁজের স্বজনদের অভিযোগ, কিছুদূর যাওয়ার পর ট্রলারটি আংশিক ডুবে গেলে ট্রলারে থাকা স্বাধীনসহ ৯৭ জনকে মারধর করে হত্যা করা হয় এবং তাদের মরদেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে স্বজনরা দালাল আবুল কালাম আজাদকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে নিখোঁজ স্বাধীনের বাবা বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন থেকে চারজনের বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে মোন্নাফ প্রামানিক ও তার স্ত্রী সোনিয়া খাতুনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, নিখোঁজ স্বাধীনকে জীবিত অথবা অন্তত তার মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশায় ঘটনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা আহাজারি করছেন। তারা এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রতিনিধি/এসএস