২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় অমৌসুমী বা ‘অফ সিজন’ তরমুজ আবাদে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার নাটঘর, শিবপুর, সাতমোড়া, নবীনগর পূর্ব ও বীরগাঁও ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষক তরমুজ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন।
চাষ পদ্ধতি ও ফলন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক জাত নির্বাচন, জমি তৈরি ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে কৃষকরা এই সফলতা পাচ্ছেন। পরিত্যক্ত পুকুর পাড় ও পতিত জমিতে মাচা কিংবা মালচিং পদ্ধতিতে অল্প পুঁজিতেই এই ফসল চাষ করা সম্ভব। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে এই তরমুজ গড়ে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তরমুজের ওজন গড়ে ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হচ্ছে।
কৃষকদের অভিজ্ঞতা স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা রাজিব জানান, কম খরচে অধিক ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। উচ্চ ফলনশীল জাতের তরমুজ চাষ করে স্বল্প সময়ে বিনিয়োগের দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভ করা সম্ভব।
বীরগাঁও ইউনিয়নের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতিতে ২০ শতাংশ জমিতে মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচে ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার টাকার তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে। একই মালচিং ব্যবহার করে ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ৩ থেকে ৪ বার তরমুজ আবাদ করা সম্ভব। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেকটাই কমে আসবে।’
কৃষি বিভাগের বক্তব্য নবীনগর উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবু নোমান জানান, অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ দেখে অন্যরাও এখন উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ফলে এ অঞ্চলে অফ সিজন তরমুজ চাষের এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, তরমুজ এখন সারা বছরই চাষ করা যায়। গ্রীষ্মকালে সারাদেশে প্রচুর তরমুজ পাওয়া গেলেও বছরের অন্য সময়ে এর চাহিদা ও দাম উভয়ই বেশি থাকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অমৌসুমী তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই এই ফসল ঘরে তোলা যায়।

তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মালচিং পেপার, সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। বিশেষ করে ‘ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট’ এবং ‘কুমিল্লা অঞ্চলে টেকসই কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প’-এর মাধ্যমে কৃষকদের কারিগরি ও উপকরণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে নবীনগর উপজেলার প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে এই আগাম তরমুজের আবাদ হয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি