images

সারাদেশ

‘আমরা সবাই হাদি হব’ স্লোগানে যশোরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি

১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম

জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ‘যশোরের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মুজিব সড়কের মডেল মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি মুজিব সড়ক হয়ে দড়াটানা ভৈরব চত্বর ও শহীদ জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্র-জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ‘আমরা সবাই হাদি হব’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’সহ নানা স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এনসিপির যশোর জেলা প্রধান সমন্বয়ক নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, “হাদির মতো একজন দেশপ্রেমিককে গুলি করে হত্যা করা ন্যাক্কারজনক অপরাধ। তিনি ছিলেন দেশের অমূল্য সম্পদ।” তিনি হত্যাকারীদের কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

তিনি আরও বলেন, “আগামী দিনের বাংলাদেশ পুনর্গঠনে যারা বাধা সৃষ্টি করবে, সেই ধরনের শক্তিকে আমরা গ্রহণ করব না। আজ যশোরসহ সারাদেশের ছাত্র-জনতা ফুঁসে উঠেছে। এই হত্যার বিচার না হলে ভবিষ্যতে কোনো দেশপ্রেমিকই নিরাপদ থাকবেন না।”

সমাবেশ শেষে শহীদ মিনারে শরীফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) সাকিব শাহরিয়ার, জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নিজামুদ্দিন অমিতসহ সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা অংশ নেন।

এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। খবর শোনার পরপরই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও প্রধান ফটক সংলগ্ন যশোর-চৌগাছা সড়কে অবস্থান নেন। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এ সময় শিক্ষার্থীরা “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”, “হাদি ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে?”, “যে ভারত খুনি পালে, সেই ভারত ভেঙে দাও”, “ভারতীয় আধিপত্য গুঁড়িয়ে দাও”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” এবং “মুজিববাদ মুর্দাবাদ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইএসটি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ওসামা, জিইবিটি বিভাগের শিক্ষার্থী জালিস মাহমুদ, পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাফি এবং আইপিই বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম মিনহাজ।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ওসামা বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এ দেশের ওপর নানাভাবে আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। শরীফ ওসমান হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—কেউ যদি বাংলাদেশকে কারও কলোনি বানাতে চায়, তবে বাংলাদেশের যুবসমাজ তা মেনে নেবে না। আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে বাংলাদেশিদের, এখানে কোনো ভিনদেশি আধিপত্য চলবে না।”

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি।

প্রতিনিধি/একেবি