জেলা প্রতিনিধি
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের ঘর থেকে উঠে এসেছে অনন্য সাফল্যের গল্প। কঠোর পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর বাবা–মায়ের অক্লান্ত ত্যাগের ফল হিসেবে যমজ দুই বোন একসঙ্গে পেয়েছে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির গৌরব। তাদের এই সাফল্যে শুধু পরিবার নয়, আনন্দে ভাসছে পুরো এলাকা।
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ইশানিয়া ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মুরারীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মশিউর রহমান ও গৃহিণী নাজমুন নাহারের সংসারে রয়েছে তিন কন্যা সন্তান। বড় মেয়ে বর্তমানে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্সে অধ্যয়নরত। ছোট যমজ দুই কন্যাকে ঘিরেই ছিল বাবা–মায়ের স্বপ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম।
মো. মশিউর রহমান শুরু থেকেই তিন কন্যাকে শিক্ষিত ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে যমজ দুই বোন ভর্তি হন সেতাবগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়ে তারা বড় বোনের সঙ্গে দিনাজপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। কলেজ জীবনেও নিয়মিত অধ্যয়ন ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলভাবে এইচএসসি পাস করেন তারা।
এরপর শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি। দীর্ঘ সময়ের অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের ফল হিসেবে শেষ পর্যন্ত তারা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করে। জাতীয় মেধাক্রমে মোছা. মুসফিকা নাসনিন ১২৩১তম হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ-এ এবং মোছা. মাখনুন আখতার ৬৬০তম হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ-এ ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
মুসফিকা নাসনিন ও মাখনুন আখতার বলেন, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমরা ভবিষ্যতে দেশ ও সমাজের মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে সেবামূলক কাজে নিয়োজিত থাকতে পারি।
যমজ দুই কন্যার এই অসামান্য সাফল্যে আবেগাপ্লুত মা নাজমুন নাহার বলেন, তিন কন্যা সন্তান নিয়ে কখনও দুশ্চিন্তা করিনি। যেভাবেই হোক তাদের লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। আজ আমার যমজ দুই কন্যা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে—এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আপনারা তাদের জন্য দোয়া করবেন।
যমজ দুই বোনের এই সাফল্য শুধু তাদের পরিবারের গর্ব নয়, বরং পুরো এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
প্রতিনিধি/এসএস