images

সারাদেশ

৭ দফা দাবিতে কুষ্টিয়ার মিরপুরে রেলপথ অবরোধ

জেলা প্রতিনিধি

১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০১ পিএম

কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলস্টেশনে স্টেশন মাস্টারের পদায়ন, দেড়শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এই স্টেশনটি সংস্কার করে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু এবং সব ট্রেনের স্টপেজসহ ৭ দফা দাবিতে মিরপুর রেল স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুর রেলওয়ে স্টেশনে রেললাইনের ওপর শুয়ে এবং ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার এলাকাবাসী অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

klusta_2

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আব্দুর গফুর এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী এ অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

অবরোধ চলাকালে বক্তব্য দেন- কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল গফুর, মিরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল করীম, উপজেলা জামায়াতের আমির রেজাউল হক, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব রহমত আলীর রব্বান, মিরপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আসাদুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রিমনসহ আরও অনেকে।

klusta_3

বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন অবহেলিত। আন্তঃনগর ট্রেনের নিয়মিত স্টপেজ না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ নানা ক্ষেত্রে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তাই সব বাধা অতিক্রম করে মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়নের সাত দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তারা।

এসময় খুলনা থেকে রাজশাহী গামী কপোতাক্ষ এবং রাজশাহী থেকে খুলনা গামী মহানন্দা ট্রেন আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন এসব ট্রেনের যাত্রীরা। এতে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচলে সাময়িক অনিশ্চয়তা ও শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দেয়।

klusta_1

এদিকে, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক আন্দোলনকারীদের বলেন, ‘রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন— আগামী সাত দিনের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরাসরি জানানো হয়েছে, আজকেই সব দাবি পূরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না এলে অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’

মিরপুর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি নজরুল করিম জানান, প্রায় দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ স্টেশনটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বন্ধের পথে। এখানে গত ৩ বছর যাবৎ স্টেশন মাস্টার নেই। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনের সংস্কারও করা হয় না। আমরা এ বিষয়ে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি, তাই এই আন্দোলন। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। ট্রেন যাত্রীদের সাময়িক দুর্ভোগের জন্য তিনি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

পরে বেলা ১২টার দিকে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন মুঠোফোনে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্টেশন মাস্টারের পদায়ন এবং পর্যায়ক্রমে সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন মুঠোফোনে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সম্মান রেখে ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গা থেকে একজন স্টেশন মাস্টারকে মিরপুর স্টেশনে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে যোগদান করবেন। বাকি বিষয়গুলো যেহেতু সময় সাপেক্ষ; সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।

প্রতিনিধি/ এজে