images

সারাদেশ

নির্ঘুম রাত উৎসুক জনতার, এখনো উদ্ধার হয়নি শিশু সাজিদ

জেলা প্রতিনিধি

১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৯ এএম

পরিত্যক্ত টিউবওয়েলের পাইপের প্রায় ৪০ ফুট গভীরে গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছর বয়সি শিশু সাজিদকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে স্থানীয় উৎসুক জনতাও। কিন্তু ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো উদ্ধার হয়নি শিশুটি।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাচোন্দর ইউনিয়নের কোয়েলের হাট পূর্বপাড়া বিলের মাঠে পরিত্যক্ত টিউবওয়েলের পাইপের ভেতর পড়ে যায় সাজিদ। রাতের দিকে মাত্র আট সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের চিকন সেই গর্তে শিশুটির অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছিল না উদ্ধারকর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিসের অনুসন্ধান ক্যামেরা ৩৫ ফুট নিচুতে গিয়ে আটকে যায়। কিন্তু শিশুটির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। এজন্য উদ্ধারকর্মীরা সিদ্ধান্ত নেয় গর্তের পাশেই অন্তত ৪০ ফুট এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি সরাতে হবে। তাহলেই হয়তো বিকল্প সুরঙ্গ খুড়ে শিশুটির সন্ধান মিলবে।

শিশু সাজিদকে উদ্ধারে দুটি এক্সকেভেটর পরিত্যক্ত ডিপ টিউবওয়েলটির পশ্চিম পাশেই রাতভর মাটি খননের কাজ করতে থাকে। ছোট্ট শিশুটিকে কখন, কিভাবে উদ্ধার করা হবে সেই মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সারারাত নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে তানোরের পাচোন্দর ইউনিয়নের শত শত উৎসুক জনতা। 

Children_

পাশের গ্রাম থেকে উদ্ধার তৎপরতা দেখতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, শিশু সাজিদ গর্তে পড়ে থাকবে আর আমরা বাড়িতে ঘুমাবো, এটা হতেই পারে না। এজন্য ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে রাতভর আমরাও শিশুটির জন্য জেগে ছিলাম। যাতে ছোট্ট সাজিদ সুস্থ ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

শুধু আমিনুল ইসলাম নয়; তার মত শত শত মানুষ শিশুটির জন্য দোয়া করছিলেন আর বলছিলেন, ‘আল্লাহ তুমি শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়ে এক অলৌকিক ঘটনা সৃষ্টি করো।’

অঘোর মন্ডল নামে আরেক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমরা সবাই সারারাত জেগে আছি। আল্লাহ যেন শিশুটিকে জীবিত অবস্থায় আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।’

এদিকে শিশুটির মা ও স্বজনরা ঘটনাস্থলে আহাজারি করছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ছেলেটি আমার পেছনে পেছনে যাচ্ছিল। হঠাৎই পা পিছলে পড়ে যায়। আমি পেছনে ফিরে দেখি, সাজিদ মা, মা বলে ডাকছে। এটা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু শামা বলেন, ‘শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। বাকিটা আল্লাহর রহমত।’

এএইচ