জেলা প্রতিনিধি
০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সবচেয়ে আলোচিত দুটি আসন কিশোরগঞ্জ-১ (সদর–হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী–বাজিতপুর) এ অবশেষে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে বিশেষভাবে আলোচনায় ছিল কিশোরগঞ্জ-৫ আসন, যেখানে জোটের সমীকরণ ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল। পাশাপাশি, কিশোরগঞ্জ-১ আসনেও একাধিক হেভিওয়েট দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে ছিল বেশ আলোচনা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন ৩৬টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন। সেখানে কিশোরগঞ্জের এই দুই আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর বিএনপি প্রথম দফায় ২৩৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে যেখানে কিশোরগঞ্জের ছয়টির মধ্যে চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়েছিল। কেবল কিশোরগঞ্জ-১ ও কিশোরগঞ্জ-৫ এই দুটি আসনের সিদ্ধান্ত তখন জানায়নি দলটি। ফলে এই দুই আসনকে কেন্দ্র করে জল্পনা-কৌতূহলের শেষ ছিল না।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল।
এই আসনটি জোটের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে এমন আলোচনা জোরেশোরে চলছিল। বিশেষ করে ১২-দলীয় ঐক্যজোটের সমন্বয়ক এহসানুল হুদা'র নাম এখানে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল। তিনি মাঠেও ছিলেন বেশ সরব। ফলে স্থানীয় বিএনপির কর্মীদের মধ্যেও ছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া, ছিল হতাশাও। শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপি নিজ প্রার্থী ইকবালকে টিকিট দিয়েছে দলটি, যা কিশোরগঞ্জের রাজনীতিতে নতুন গতি এনেছে বলে মনে করছেন কর্মী-সমর্থকেরা।
অপরদিকে, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির তিনবারের সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম মনোনয়ন পেয়েছেন কিশোরগঞ্জ-১ আসনে। এই আসনে আরও কয়েকজন ভারী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন যেমন, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক স্পেশাল জজ মো. রেজাউল করিম খান চুন্নু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, ব্যারিস্টার এম আতিকুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন।
মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় মাজহারুল ইসলাম বলেন ‘দল আমার দীর্ঘদিনের শ্রম, ত্যাগ ও নির্যাতন-নিপীড়নের মূল্যায়ন করেছে। ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে থেকেছি। আজ তারেক রহমান ও মহাসচিবসহ সকল নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েই ধানের শীষকে বিজয়ী করব।’
এর আগে প্রথম দফায় কিশোরগঞ্জের অন্যান্য ৪ আসনে মনোনীত হন কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী–পাকুন্দিয়া) আসনে অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দীন, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ–তাড়াইল) আসনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা–মিঠামইন–অষ্টগ্রাম) আসনে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব–কুলিয়ারচর) আসনে দলটির জেলা কমিটির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও আনন্দমিছিল চলতে থাকে কিশোরগঞ্জ জেলায়।
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন কিশোরগঞ্জ-১ ও কিশোরগঞ্জ-৫ এই দুই আসনের মনোনয়ন ঘোষণা হওয়ায় কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনেই এখন বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগাম প্রার্থী চূড়ান্তের বিষয়টি ভোটের মাঠে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে দলটিকে।
প্রতিনিধি/একেবি