জেলা প্রতিনিধি
১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
জুলাই বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের পক্ষ থেকে নিজ গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর এলাকায় শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে এ মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ঘোষণা করা হবে, এজন্য সকাল থেকেই রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর এলাকায় শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে।
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বেলা পৌনে ৩টার দিকে রায় ঘোষণা করা হলে সারাদেশের মতো রংপুরেও আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পূর্ব থেকেই উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন। মিষ্টি বিতরণের সময় সবার হাসিমুখ দেখা যায়।
রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী তার পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তুষ্টির কথা জানান। রমজান আলী বলেন, আমরা এ রায়ে খুশি হয়েছি। তবে রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয় সেজন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, শুধু রায় ঘোষণা করেই যেন শেষ না হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ছেলেকে হারিয়ে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা কোনোদিন পূরণ হবার নয়। আমার মতো আর যেন কোনো মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়, সেজন্য দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণা করায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যারয় ও কারমাইকেল কলেজসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও শেখ হাসিনাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবিতে জাতীয় ছাত্রশক্তির আয়োজনে বাইক শোডাউন করা হয় রংপুর নগরীতে।
কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালেল ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। পরের দিন ১৭ জুলাই পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয় তাকে।
সেই সময় আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সারাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বিমানযোগে ভারতে পালিয়ে গেলে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন শহীদ আবু সাঈদ।
প্রতিনিধি/ক.ম/