images

সারাদেশ

মুখর হয়ে উঠেছে শেরপুরের কামারপাড়াগুলো

জেলা প্রতিনিধি

৩০ জুন ২০২২, ০৩:৪৯ পিএম

আসছে কোরবানির ঈদ। টুং-টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে শেরপুরের বিভিন্ন এলাকার কামারপাড়া। ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। লোহার তৈরি নতুন দা-চাপাতি ও ছুরি তৈরির পাশাপাশি চলছে পুরনোগুলো শান দেওয়ার কাজ। তবে কামারপাড়ায় নেই আগের সেই জৌলুস।

শেরপুর পৌর শহরের মোবারকপুর মহল্লার কামারপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, তপ্ত ইস্পাত গলিয়ে চলছে পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরির কাজ। দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। কেউ ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খণ্ড। কেউ পুরনো দা-ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। কেউবা হাপর টানছেন। কেউ আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন।

এছাড়াও সদর, নকলা, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু ও বঁটির বেচাকেনা বেড়েছে। দামও সন্তোষজনক।

তবে কারিগরদের অভিযোগ, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। বর্তমানে বাজারে সব খাদ্যপণ্যের দাম হু হু করে বেড়ে গেলেও বাড়েনি তাদের রোজগার। সারাদিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা শরীরে তৈরি হয়।
kamarparaমোবারকপুর মহল্লার কামারপাড়ায় কামারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে। কারণ জানতে চাইলে তারা ঢাকা মেইলকে জানান, এ কাজ করে যে আয় হয়, তা দিয়ে দিন চলে না। ফলে বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছেন অনেকেই। তাই এ মহল্লায় কামারের সংখ্যা অর্ধেকে নেমেছে।

কামারপাড়ার ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমার পূর্বপূরুষদের পেশা হিসেবে আমি ধরে রেখেছি এ শিল্প। কিন্তু অনেকেই ছেড়ে দিয়েছে এ পেশা কারণ একজন রাজমিস্ত্রী সারাদিনে পায় ৭শ টাকার মতো আর আমরা বছরের বেশিরভাগ সময় চালই কিনতে পারি না। 

তার দাবি, সরকারি সহযোগিতা পেলে হয়তো আবার ফিরে আসবে সেই সুদিন।

পৌর শহরের আখের মামুদ বাজারের জামিল কামার বলেন, সারা বছর আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে কোরবানির সময় বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। তবে লাভ আগের চেয়ে কম।
kamarpara একই বাজারের কামার আব্দুর রশিদ জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। বাজারে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। আর অই তুলনায় আমাদের পণ্যের দাম বাড়েনি। তাদের প্রত্যাশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।

শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের গোলাপ মিয়া আখের মামুদ বাজারে কামারের দোকানে এসেছেন,  তিনি জানান, কুরবানি ঈদের বেশ কিছুদিন বাকি তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বঁটির দাম একটু বেশি।

বিসিক শিল্প নগরীর শেরপুরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান ফকির ঢাকা মেইলকে বলেন, কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ক্ষুদ্রশিল্পের আওতায় সরকারি সহযোগিতা পেতে পারে। কেউ সহযোগিতা চাইলে বিসিক শিল্প নগরীর শেরপুর তাদের পাশে থাকবে।

প্রতিনিধি/এএ