images

সারাদেশ

জামায়াতের সভায় হামলার অভিযোগ যুবদলের বিরুদ্ধে, আহত ৩

জেলা প্রতিনিধি

০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৩ পিএম

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জামায়াত ইসলামের একটি সাধারণ সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন যুবদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।

হামলায় সান্দিকোনা ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে সান্দিকোনা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

বিএনপি যুবদল নেতাদের অভিযোগ- জামায়াত ইসলামী আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পদধারী নেতাদের নিয়ে সভা করে সেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছিলেন। স্থানীয় যুবদলের নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ করলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চলায়। এতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন রাত ১০টার দিকে কেন্দুয়া পৌরশহরের সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা, দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলে সান্দিকোনা বাজারে একটি কোচিং সেন্টারে ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সভা চলছিল। সেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্যসহ আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে সভা করার অভিযোগ তুলে ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। হামলায় ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম, জামায়াতের কর্মী নয়ন মিয়া ও শামীম মিয়াসহ তিনজন আহত হন। আহতদের মধ্যে মাজহারুল ইসলামকে সর্বশেষ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর অন্য দুজন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১০টার দিকে উপজেলা জামায়াতের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জামায়াতের আমির ছাদেকুর রহমান। এ সময় নায়েবে আমির মো. রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম, বায়তুলমাল সেক্রেটারি, মো. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

thumbnail_1000134594

আমির ছাদেকুর ইসলাম বলেন, আমাদের দলের সান্দিকোনা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ সভা চালাচ্ছিলেন। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বানোয়াট ইস্যু তৈরি করে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন যুবদল নেতা-কর্মী হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন জামায়াতের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ তিনজন আহত হন। এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের নিশ্চয়তার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে কেন্দুয়া পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়েত ইসলামী।

আরও  পড়ুন

মণিরামপুরে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতার মৃত্যু

এদিকে, হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যৌথ বিবৃতিতে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ছাদেক আহমাদ হারিছ ও সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী একটি শান্তিপ্রিয়, সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। চব্বিশের গণআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ফলে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মানুষের আজ গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। গণমানুষের এই সমর্থন দেখে প্রতিযোগী রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি অনেকটা দিশেহারা হয়ে গিয়েছে। আমাদের নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পথ বেছে নিয়েছে। আমরা তাদেরকে দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশছাড়া করার পর নতুন কোনো ফ্যাসিস্টকে এদেশের মানুষ বরদাস্ত করবে না। এদেশে আমরা আর কাউকে নতুন করে স্বৈরাচার হয়ে উঠতে দেবো না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর স্থান হবে না।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান হাবুল বলেন, 'আমার রড-সিমেন্টের দোকানের পাশে একটি কোচিং সেন্টারে তারা মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের পদধারী নেতাদের নিয়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিল। পরে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এরপর দু'পক্ষের মধ্যে দাওয়া পাল্টা তাহলে বাজারের মুরুব্বিরা থামিয়ে দেন। এতে আমিসহ যুবদলের আরও দু'জন কর্মী আহত হয়েছেন।

সান্দিকোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের প্রোগ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন পদধারী নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিএনপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছিল। পতিত ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে এ কর্মসূচি আয়োজন করায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আপত্তি জানালে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এতে আমাদের দলের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস