জেলা প্রতিনিধি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
কাঁদা-মাটি দিয়ে সাধারণত প্রতিমা তৈরি হলেও নাটোরে এবার পাটের আঁশ দিয়ে ব্যতিক্রমী দুর্গাদেবীর প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। এ প্রতিমাটি শহরের লালবাজার কদমতলার রবি সূতম সংঘের পূজা মণ্ডপের জন্য প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল তৈরি করেন। এর আগে গত বছর ধান দুর্গাদেবীর প্রতিমা তৈরি করে সারাদেশ বেশ সাড়া ফেলে ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, বহু বছর আগে স্বর্গীয় নিমাই চন্দ্র পাল নাটোর শহরের লালবাজারে প্রতিমা তৈরির একটি কারখানা গড়ে তুলেন। তার হাতের তৈরি প্রতিমার বেশ কদর ছিল। নিখুঁত হাতে চমৎকারভাবে প্রতিটি প্রতিমাকে শিল্পকর্মের মাধ্যমে সাজিয়ে তুলতেন তিনি। তার দেবীর প্রতিমার বেশ চাহিদা ছিল।
তার মৃত্যুর পর অল্প পরিসরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেন তার ছেলে বিশ্বজিৎ পাল এবং ছোট ভাই গোপাল চন্দ্র পাল। এবছর ২০ কেজি পাটের আঁশ দিয়ে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করেছেন। এ পাটের তৈরি দুর্গাপ্রতিমা নজর কেড়েছে সবার। দর্শনার্থী-ভক্তরা প্রতিদিন ভিড় করছেন লালবাজারে। সেখানে রঙ-তুলির আঁচড়ে সেজে উঠছেন দেবী দশভূজা।
প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল বলেন, আমাদের বাবা-দাদুরা সবাই প্রতিমা তৈরির কাজ করতেন। আমরা প্রতি বছর নতুনত্ব প্রতিমা তৈরি করি। গত বছর ধানের প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। সবাই সেটি পছন্দও করেছিল। এবার রবি সূতম সংঘ তাদের মণ্ডপের জন্য সোনালি পাটের আঁশ দিয়ে মোড়ানো প্রতিমা তৈরি করেছি। সবার প্রতিমাটি নজর কেড়েছে। অনেক দর্শনার্থীরা প্রতিমাটি দেখতে আসছেন। পাটের আঁশ দিয়ে প্রতিমা বানানো কাজটা খুব সহজ নয়, তা জেনেও কাজটি শুরু করি। প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট ও বিচালির কাঠামো তৈরি করা হয়। পরে তাতে মাটি দিয়ে প্রতিমার আকৃতি আনা হয়। মাটি শুকিয়ে যাওয়ার পর মাটির ওপর সোনালি পাটের আঁশ দিয়ে মোড়ানো হয় প্রতিমা। প্রায় ২ মাস লেগেছে পুরো প্রতিমাটি আদিরূপ ফুটিয়ে তুলতে।
রবি সুতম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় বলেন, ভক্তদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে রবি সুতম সংঘ প্রতিবছর ভিন্ন রকম প্রতিমা তৈরি করেন। যা সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত বছর ধানের তৈরি প্রতিমায দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এ বছরেও আশা করছি, পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি প্রতিমা দর্শন ও ভক্তরা খুশি হবেন।
প্রতিনিধি/টিবি