জেলা প্রতিনিধি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
ঝিনাইদহের চাঞ্চল্যকর তোয়াজ উদ্দীন (৫৩) হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি তানভীর হাসান (১৮) নামে এক মাদরাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বিষয়টি জানান।
অভিযুক্তকে গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা এলাকা থেকে থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হত্যাকারী পালিয়ে যাওয়ার সময় তোয়াজের ঘরের দেওয়ালে লিখে রেখে যায়, তাকে মারার কারণ সে মুহাম্মাদ (স.)-কে গালি দিসে, তার নামে খারাপ কথা বলেছে, আল্লাহু আকবার।
গ্রেফতার তানভীর হাসান যশোর কোতোয়ালি থানার কামারগন্যা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। খুন হওয়ার কোতোয়ালি পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সাল থেকে ব্যবসায়ী তোয়াজ উদ্দিনের সাথে তানভীরের পরিচয় হয়। স্ত্রী না থাকায় তোয়াজের সঙ্গে তার সমকামিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে তানভীর তোয়াজ উদ্দীনের ঢাকার বাসা ও গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করত।
গত ১ সেপ্টেম্বর তোয়াজ উদ্দিনের সাথে আসামি তানভীর হাসান ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে আসে। ওই রাতে তোয়াজ উদ্দিন জোরপূর্বক আসামি তানভীর হাসানকে বলাৎকার করে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে ক্ষুব্ধ হয় তানভীর। ঘরের মধ্যে থাকা পাথর (শীল) দিয়ে ঘুমন্ত তোয়াজের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে তানভীর। হত্যার তিনদিন পর ৩ সেপ্টেম্বর তোয়াজের ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তানভীর জানায়, তোয়াজকে হত্যার পর তার পা বেঁধে তোয়াজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে তালাবদ্ধ করে চাবি পাশের পুকুরে ফেলে দেয় তানভীর। যাওয়ার সময় দেয়ালে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায়। তাতে লেখা ছিল 'তাকে মারার কারণ সে মুহাম্মাদ (স.)-কে গালি দিসে, তাঁর নামে খারাপ কথা বলেছে, আল্লাহু আকবার'।
এলাকার চেয়ারম্যান খুরশিদ মিঞা জানান, সে যে সমকামী ছিল তা এলাকার মানুষ মোটেও জানতেন না। তোয়াজ গ্রামের বাড়িতে আসলে মাদরাসার ছাত্ররা আসা যাওয়া করত। গ্রামবাসী মনে করতো মাদরাসা ছাত্রদের সে আর্থিক সহায়তা করত। তানভীর নামে ওই মাদরাসার ছাত্র গ্রেফতার পর তোয়াজ খুন হওয়ার বিষয়টি জানা গেল।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, হত্যার পর মোটিভ ও ক্লুলেস ছিল মামলাটি। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আক্কাচ আলী বাদী হয়ে মামলা করেন। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল বিষয়টি সর্বক্ষণ মনিটরিং করে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তি শনাক্ত ও পরে তাকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
প্রতিনিধি/এসএস