জেলা প্রতিনিধি
২৮ জুন ২০২২, ০৫:১৭ পিএম
কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে রংপুরের খামারিরা প্রস্তুত করেছেন তাদের খামারের গরু-ছাগল। এবার রংপুরে রেকর্ড পরিমাণ কোরবানির পশু রয়েছে। জেলায় দুই হাজার কোটি টাকার বেশি গরু-ছাগল বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। তবে লাভের আশায় গরু প্রস্তুত করতে গিয়ে গোখাদ্যের দাম চড়া থাকায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, চলতি বছর কোরবানির জন্য রংপুর জেলার ২৫ হাজার ৭১ জন খামারির কাছে রেকর্ড পরিমাণ সাড়ে তিন লাখ পশু রয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে। এ অবস্থায় খামারিরা বলছেন, দেশের বাইরে থেকে পশু আমদানির কোনো প্রয়োজন হবে না। বরং রংপুরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে।
এবছর কোরবানির জন্য ৩৫টি গরু প্রস্তুত করেছেন রংপুর মাহিগঞ্জের তানভীর হোসেন। তিনি গত দুই বছর লোকসানে থাকলেও এবছর লাভের আশায় ব্যাংকে ঋণ নিয়ে গরু প্রস্তুত করেছেন, এতে প্রত্যেক মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয় তার। তবে গো-খাদ্যের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে সেটা অব্যাহত থাকলে লোকসানের কারণে বন্ধ করতে হবে এ ব্যবসা-এমনটাই বলছেন তিনি।
খামারি নুর হোসেন জানান, তার খামারে কোরবানির জন্য উপযোগী প্রায় ৩০টি গরু রয়েছে। ২০১৮-২০১৯ সালে লাভ করলেও করোনাকালীন এই দুই বছর লাভ হয়নি। বরং লোকসান হয়েছে তার।
একই কথা জানালেন মিঠাপুকুর উপজেলার খামারি মমতাজুর রহমান। তিনি বলেন, গরু মোটাতাজা এবং পুষ্ট করতে ভুসি, খৈল, চালের গুঁড়াসহ নানা খাদ্যের প্রয়োজন। একটা গরুর পেছনে কমপক্ষে গড়ে প্রতিদিন পাঁচশ টাকা করে ব্যয় হয়। এবার গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই পশুপালনে খরচও অনেক বেশি হয়েছে। সে অনুযায়ী দাম পাওয়ার আশা কম।
আরেক খামারি আব্দুল মতিন আজিজ কোরবানিকে সামনে রেখে প্রস্তুত রেখেছেন ১২০টি গরু। কোরবানির আর বেশিদিন না থাকলেও সবগুলো গরু বিক্রি হবে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে তার। এদিকে প্রতিদিন তার গো খাদ্যেও অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। অন্য খামারিদেরও একই অবস্থা। তবে করোনার প্রকোপ কমায় এবারে লাভের অংক কষতে চাচ্ছেন তারা।
রংপুর জেলা ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সমিতির সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন ঢাকা মেইলকে জানান, এবারেও লাভের সম্ভাবনা দেখছেন না। কেননা গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি। কোনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। তারপরও আশা ছাড়ছেন না। কোরবানি ঈদে যেন কোনোভাবেই ভারতের গরু দেশে না ঢোকে সে ব্যাপারে সরকারকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাবুল হোসেন ঢাকা মেইলকে জানান, খামারিরা এবার রেকর্ড পরিমাণ পশু প্রতিপালন করেছেন। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার চাহিদা পূরণ করতে পারবে। তবে পশুখাদ্যের দাম এবার একটু বেশি। এতে খামারিদের লাভ কম হবে। তবে তাদের লোকসান হবে না বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি/জেবি