images

সারাদেশ

সুন্দরবনের পাঁচ কুমিরের অজানা জীবন কাহিনী থেমে গেল মাঝপথে

জেলা প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৫৫ এএম

সুন্দরবনের লোনাপানির কুমির নিয়ে এক অভিনব গবেষণা শুরু হলেও হঠাৎ থেমে গেছে মাঝপথেই। আধুনিক স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছিল পাঁচটি কুমিরের গায়ে। লক্ষ্য ছিল অরণ্যের গভীরে তাদের অজানা জীবনধারা জানা। কিন্তু কিছুদিন পরই একে একে হারিয়ে যায় সব কুমিরের সিগন্যাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবনের করমজল প্রজননকেন্দ্র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, হাওলাদার আজাদ কবির

জুলিয়েট, মধু, পুটিয়া, জোংড়া ও হাড়বাড়িয়া নামের এই পাঁচ কুমিরের শরীরে বসানো হয়েছিল ট্রান্সমিটার। ২০২৪ সালের মার্চে করমজল প্রজননকেন্দ্র থেকে শুরু হয় এ অভিযান। কারও জন্ম সুন্দরবনের খালে, কেউ লোকালয় থেকে উদ্ধার হয়ে আবার কেউ দীর্ঘ বন্দিজীবন শেষে ফিরে গিয়েছিল প্রকৃতিতে।

thumbnail_Sundarban_crocodiles-2

হাওলাদার আজাদ কবির জানান, প্রথমদিকে প্রতিটি স্যাটেলাইট সিগন্যাল যেন জানিয়ে দিচ্ছিল নতুন গল্প। গবেষকরা মানচিত্রে বিন্দুর মতো তাদের গতিপথ দেখে বুঝতে পারছিলেন অভ্যাস ও চলাফেরার ধরন। জুলিয়েট ৭১ দিনে অতিক্রম করে ১৪৫ কিলোমিটার, মধু ১২৭ দিনে ১৭০ কিলোমিটার, পুটিয়া ৮৩ দিনে ২০৪ কিলোমিটার এবং হাড়বাড়িয়া ৫২ দিনে মাত্র ৫১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে জোংড়া। শরীয়তপুর থেকে উদ্ধার হওয়া এই কুমির ৬৪ দিনে ঘুরে বেড়ায় ৪৭৩ কিলোমিটার এবং ফিরে যায় তার নিজ খালে।

গবেষকদের আশা ছিল দুই মাসের মতো তথ্য মিলবে। সৌভাগ্যক্রমে কয়েকটি কুমিরের কাছ থেকে একশ দিনেরও বেশি সময়ের তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও এখন তাদের আর কোনো খোঁজ নেই।

thumbnail_Sundarban_crocodiles-3

এই গবেষণায় অংশ নেয় আইইউসিএন বাংলাদেশ, জিআইজেড জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার কুমির বিশেষজ্ঞ সামারাভিরা ও পল বেরি। সহযোগিতায় ছিলেন বন বিভাগ ও ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টারের কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু অক্টোবরে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশে লোনাপানির কুমির কেবল সুন্দরবনেই পাওয়া যায়। ২০১৭ সালের জরিপে সংখ্যা ছিল ১৫০ থেকে ২১০টির মধ্যে। বর্তমানে করমজল প্রজননকেন্দ্রে রয়েছে ৯২টি কুমির। তবে বংশবিস্তার কমছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

thumbnail_Sundarban_crocodiles-5

গবেষণার ফল বলছে, প্রতিটি কুমিরের আলাদা জীবনধারা রয়েছে। কেউ শান্ত, কেউ নদী থেকে নদীতে ঘুরে বেড়ায়। যদিও সিগন্যাল হারিয়ে গেছে, তবু তাদের গল্প থেকে গেছে গবেষকদের নথিতে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বোঝার নতুন জানালা খুলে দিয়েছে এই পাঁচ কুমির।

প্রতিনিধি/এসএস