images

সারাদেশ

জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৩:০৪ পিএম

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন ও জন্ম সনদ সংশোধনে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শিমুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক দেশে জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনা ফি-তে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, শিশুদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পঁচিশ টাকা ও পাঁচ বছরের উর্ধ্বে সকল বয়সী নাগরিকের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ টাকা এবং জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে একশ’ টাকা ফি নির্ধারিত থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে বর্ণি ইউনিয়ন পরিষদের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শিমুল বিশ্বাস বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের সেবাগ্রহীতারা।

স্থানীয় একাধিক সেবাগ্রহীতার অভিযোগ— সরকারী নিয়মকে উপেক্ষা করে নতুন জন্ম সনদ প্রতি পাঁচশ’ থেকে দুই হাজার টাকা এবং জন্ম সনদ সংশোধনের জন্য পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকার দাবি করছেন অভিযুক্ত শিমুল বিশ্বাস।

কাজলী বেগম নামের একজন সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার আঠারো বছর বয়সী মেয়ের জন্ম নিবন্ধন করতে সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিলে পরের সপ্তাহে ইউনিয়ন পরিষদে আসতে বলেন শিমুল। এক সপ্তাহ পর পরিষদে গেলে জন্ম নিবন্ধন করতে দুই হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। তাই জন্ম নিবন্ধন না করে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।’

দক্ষিণ বর্নি গ্রামের বাসিন্দা সোমা বলেন, ‘আমার মেয়ের এবং আমার জন্ম নিবন্ধন করতে শিমুলকে সাতশ’ টাকা দিয়েছি কিন্তু দুই মাস ধরে এখনও জন্ম নিবন্ধন সনদ পাইনি।’

একই এলাকার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরুল বলেন, ‘আমার বয়স সংশোধন করতে ইউনিয়নে গেলে অফিস সহকারী শিমুল পঞ্চম শ্রেণির সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে বলেন। পরে আমি সার্টিফিকেট নিয়ে গেলে সে বলে এতে নাকি হবে না। আরো কী কী কাগজ লাগবে জানতে চাইলে সে আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চায়। তাই আর জন্ম তারিখ সংশোধন করাতে পারিনি।’

তবে এ বিষয়ে শিমুল বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করে বলেন, এলাকার কিছু ব্যক্তি ও পরিবারের কাছ থেকে অনেক সময় ফি ছাড় দিতে হয় সেজন্য সেই টাকা পোষাতে সরকারের নির্ধারিত ফি অনুসারে পঞ্চাশ টাকা হলে সেখানে একশ’ এবং একশ’ টাকা হলে সেখানে দেড়শ’ বা দুইশ’ টাকা অন্যদের কাছ থেকে নিতে হয়।

তবে পাঁচ হাজার টাকা দাবির বিষয়টিকে ‘মিথ্যা অভিযোগ’ বলে দাবি করেন তিনি।

বর্ণি ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান আমিনুল বলেন, আমি দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর সবাইকে সরকারের নির্ধারিত ফি-টাই নিতে বলেছি। অফিস সহকারী শিমুল বিশ্বাস যদি অতিরিক্ত ফি আদায় করে তবে সে দায় তার ব্যক্তিগত। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত ফি-এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অপরাধ। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এএ