images

সারাদেশ

চৌগাছা পশুহাট ইজারায় অনিয়ম, রাজস্ব হারালো ৭১ লাখ

জেলা প্রতিনিধি

১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

যশোরের চৌগাছা পশুহাটের ইজারা নিয়ে চাঞ্চল্যকর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সর্বোচ্চ দরদাতা আতিউর রহমান লালকে ইজারা না দিয়ে, সুপারিশ করা হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা শহিদুল ইসলামকে। এতে করে সরকার ৭১ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালে তৎকালীন পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আলম মামুন হিমেলের নেতৃত্বে একটি চক্র শহিদুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানের নামে ৮০ লাখ ১৫ হাজার টাকায় হাটের ইজারা গ্রহণ করে। অথচ ওই বছরের হিসাব অনুযায়ী, এখনও পৌরসভার পাওনা রয়েছে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫০ টাকা।

তারা আরও জানান, চলতি বছর সর্বোচ্চ দরদাতা ছিলেন আতিউর রহমান লাল, যিনি ২ কোটি ৫১ লাখ টাকায় দরপত্র জমা দেন। এ ঘোষণা চৌগাছা বাজারসহ আশপাশের মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশও পায়। তবে, পরবর্তীতে ‘অদৃশ্য প্রভাব’-এর কারণে পৌর প্রশাসন ও মূল্যায়ন কমিটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা শহিদুল ইসলামকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ইজারা প্রদান করে। এতে করে সরকার প্রায় ৭১ লাখ টাকা রাজস্ব হারায়।

এ বিষয়ে আতিউর রহমান লাল বলেন, ‘পৌর প্রশাসক আমাকে কোনো কারণ জানাননি। অন্যদের মুখে শুনেছি, নাকি আমার কাগজপত্রে সমস্যা ছিল, তাই ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দরপত্র জমা দেওয়ার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন। তাই পৌর প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’

এদিকে গত শনিবার চৌগাছা পৌর পশুহাট পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি শেলী। সে সময় বিএনপি নেতা গোবিন্দ কুমার রাহা তার উদ্দেশে বলেন, ‘চৌগাছায় একটি মাত্র পশুহাট, যেটি আমরা দীর্ঘ পরিশ্রমে প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন একটি সিন্ডিকেট হাটটি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে।’

সিনিয়র সচিব সব কথা শোনার পর বলেন, ‘চৌগাছার একমাত্র পশুহাট ধ্বংস করা যাবে না। এটি অনেক মানুষের জীবিকার উৎস। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।’

এ বিষয়ে চৌগাছা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। মূল্যায়ন কমিটি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।’

মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সর্বোচ্চ দরদাতা আতিউর রহমান লালের টিআইএন সার্টিফিকেট ছিল না, তাই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা শহিদুল ইসলামকে হাটটি দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিনিধি/একেবি