images

সারাদেশ

ন্যায় বিচারের আশ্বাসে নারীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

জেলা প্রতিনিধি

১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দ্বারে দ্বারে ঘুরে ন্যায় বিচার না পেয়ে তিন-চার মাস ধরে ঘর ছাড়া অসহায় দুই সন্তানের এক মা। তাকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বির আহমেদ কছিম কুপ্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কালিয়াকৈর মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার খিলপাড়া এলাকার মৃত চান মিয়ার ছেলে সোহরাফ হোসেনের সঙ্গে শ্রীপুর উপজেলার বাশঁবাড়ী এলাকার দানেছ আলীর মেয়ে মাফিয়া আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে মিলন হোসেন (১৭) ও  রায়হান হোসেন (৭) নামে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। 

২০১৮ সালে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে মাফিয়ার বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লাখ টাকা নেন তার স্বামী সোহরাফ। তিনি  প্রায় দুই বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে স্ত্রী মাফিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। সর্বশেষ তাকে মারধর করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি গ্রাম্য শালিসে বসলেও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিমের প্রভাবে তা পণ্ড হয়ে যায়। 

পরে বিএনপি নেতা শেখ সাব্বির আহমেদ কছিম ন্যায় বিচার করে দেওয়ার কথা বলে মাফিয়া আক্তারকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ওই নারীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান ও তার স্বামীকে দিয়ে সন্তানসহ তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। এরপর ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেন। অভিযুক্তদের ভয়ে গত তিন-চার মাস ধরে দুই সন্তান নিয়ে ওই নারী অন্যত্র থাকেন। 

IMG-20250814-WA0005
সন্তানসহ ভুক্তভোগী নারী মাফিয়া আক্তার। ছবি: প্রতিনিধি

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর কলহের বিষয়টি মীমাংসার জন্য বিএনপির ওই নেতার হাতে-পায়ে ধরেছি। কিন্তু তিনি মীমাংসার কথা বলে আমাকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার স্বামীকে দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেন। আমাদের শুধু তাড়িয়েই দেননি, বিএনপির নেতা কছিম বলছেন, আমাকে স্বামী তালাক দিয়েছেন। কিন্তু তালাকের কোনো  কাগজ আমি পাইনি। তবে এখন দুই ছেলে নিয়ে আমি ঘর ছাড়া। যেখানে ভাড়া থাকি সেখানে হুমকি দিচ্ছে ওই বিএনপির নেতা।

অভিযুক্ত ওই নারীর স্বামী সোহরাফ হোসেন বলেন, তাকে তালাক দিয়েছি। তালাকের কাগজ মাতব্বরদের কাছে আছে। 

এদিকে ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাব্বীর আহম্মেদ কছিম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। আমার প্রতিপক্ষ আমাকে হেয় করার জন্য ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা বলাচ্ছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই নারী অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে গ্রাম্য আদালতের পক্ষ থেকে দুই পক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিনিধি/ক.ম/