images

সারাদেশ

হাসিনা পালিয়েছে, আপনারা ইঁদুরের গর্তও পাবেন না: চাঁদাবাজদের ছাত্রশিবির

ঢাকা মেইল ডেস্ক

০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৪৫ পিএম

গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহীতে বিশাল র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে সংগঠনটির রাজশাহী মহানগর শাখার আয়োজনে এ কর্মসূচি হয়। এ সময় ৫ আগস্ট নগরীতে শাহাদাত বরণকারী আলী রায়হান ও সাকিব আনজুমের খুনীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্রশিবিরের নেতারা। 

চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নেতারা বলেন, খুনী হাসিনা দিল্লি পালিয়ে যেতে পেরেছে, আপনারা আশ্রয় নেওয়ার জন্য ইঁদুরের গর্তও খুঁজে পাবেন না।

বিকেল ৪টায় নগরীর হেতম খা থেকে র‌্যালি বের করা হয়। সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট ও আলুপট্টিসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় প্রদক্ষিণ করে কল্পনা মোড়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। কর্মসূচিতে ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ড নেতাকর্মীরা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। 

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূইয়া। বক্তব্য দেন শহীদ আলী রায়হানের বাবা মুসলেম উদ্দিন ও ভাই তানভীর ইসলাম রানা, ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরের সভাপতি শামীম উদ্দীন, সেক্রেটারি ইমরান নাজির ও অফিস সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূইয়া বলেন, এক বছর আগে ঠিক এখানেই আমাদের ভাই আলী রায়হানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর পাশেই সাকিব আনজুমকেও হত্যা করা হয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি বছর পার হলেও খুনের বিচার হয়নি। কোনো বিচারের অগ্রগতিও দেখতে পাচ্ছি না। খুনীরা এই শহরের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আসাদুজ্জামান ভূইয়া বলেন, আমরা বৈষম্যমুক্ত সমাজ চেয়েছিলাম। চাঁদাবাজ মুক্ত দেশ চেয়েছিলাম। যে স্বপ্ন নিয়ে রক্ত দিয়েছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। যুবলীগের গুণ্ডারা ঘুরে বেড়াচ্ছে, গ্রেফতার-জামিনের নামে নাটক দেখতে পাচ্ছি। স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার হতে পারে নাই। 

উপদেষ্টাদের উদ্দেশে ছাত্রশিবিরের এই নেতা বলেন, অতি দ্রুত খুনী স্বৈরাচারের দোসরদের সব অফিস থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়া আরেকটা জুলাই ঘটানোর জন্য ছাত্রশিবির প্রস্তুত আছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কোনো তালবাহান চলবে না।

মহানগর সভাপতি শামীম উদ্দীন বলেন, আজকের দিনে এই জায়গাতে আমাদের ভাই আলী রায়হানকে গুলি করে হত্যা করেছিল। কিন্ত দীর্ঘ এক বছরেও খুনের বিচার হয়নি। খুনি রুবেলকে রিমান্ডে আনা হয়েছিল। কিন্তু তাকে থানায় রিমান্ডে এনে ফাইভ স্টার হোটেলের খাবার খাওয়ানো হয়। আপনাদের বলে দিচ্ছি, ভেবে-চিন্তে কাজ করবেন। আলী রায়হানের উত্তরসূরিরা সারাদেশে আছে। 

চাঁদাবাজদের উদ্দেশ করে শামীম উদ্দীন বলেন, কথায় কথায় ‘বাংলা ছাড়’ যারা বলেন তাদের বলে দিচ্ছি, দেশ ও এ রাজশাহী শহর কারও বাপের না, যারা বাংলা ছাড়ার কথা বলছেন, চাঁদাবাজি করছেন, হাসিনা তাও দিল্লি পালিয়েছে। হাসিনার মতো সময় পাবেন না পালানোর, ইদুরের গর্তও পাবেন না পালানোর জন্য।

মহানগর ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইমরান নাজির বলেন, এক বছরেও ফ্যাসিস্টদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। রাজশাহীতে প্রকাশ্যে ঘুরছে ফ্যাসিস্ট ও খুনীরা, দিনদুপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে শহীদ আলী রায়হানের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। এক বছরেও বিচারের রূপ দেখতে পাচ্ছি না। আমরা বলতে চাই, আরেকটা ৩৬ জুলাই অপেক্ষা করছে, প্রস্তুত হন।

মহানগর অফিস সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যতদিন খুনের বিচার না হবে, দেশ চাঁদাবাজমুক্ত না হবে, ক্যাম্পাসগুলো সন্ত্রাসমুক্ত না হবে, ততদিন শিবির আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আমরা ঘরে বসে থাকবো না। চাঁদাবাজ, খুনী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবেই।

এদিকে বিকেলে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরী শাখার আয়োজেন মিছিল ও সমাবেশ শুরু হয়। নগরীর আলুপট্টি মোড় থেকে বিশাল মিছিল শুরু হয়। গণকপাড়া মোড়ে সমাবেশে এসে মিছিল শেষ হয়। সেখানে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

এছাড়া এদিন সকাল থেকে প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি দফতরের উদ্যোগে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ যথাযোগ্যভাবে পালন করা হয়।  

প্রতিনিধি/ক.ম