images

সারাদেশ

কোটি টাকার রাস্তায় বৃষ্টি হলেই বড় বড় গর্ত, বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি

০২ আগস্ট ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

সোয়া ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক সড়ক নির্মাণের পর মেরামতের নামে কয়েক ধাপে ব্যয় করা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। এরপরও মাদারীপুর-শরিয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কে রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দক। একটু বৃষ্টি হলেই বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়।। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রী-চালক-পথচারীরা। একইসাথে বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর-শরিয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের ৭ কিলোমিটার দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। ৭৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মোস্তফাপুর থেকে ডিসি ব্রিজ এলাকায় সড়কের কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে। 

এরপর ২০২০-২১ অর্থ বছরে নওগাঁর স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জরুরিভাবে মেরামতে ব্যয় করা হয় ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু হালকা বৃষ্টিতেই দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত। এ কারণে বৃষ্টি হচ্ছে এ এলাকার মরণফাঁদ। পরে ২০২১-২২ অর্থবছরে ঢাকার বনানী এলাকার ওটিবিএল ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড নামে দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মেরামতে সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ করে সওজ। এরপর প্রতিবছর সংস্কারের নামে সড়ক বিভাগ নিজেরাই খরচ করছে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু পাল্টাচ্ছে না সড়কের চিত্র। অসংখ্য খানাখন্দক রয়ে গেছে এ রাস্তায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক সড়ক। বছর বছর সংস্কারের নামে ব্যয় করা হয় লাখ লাখ টাকা। তবুও কেন সড়ক বেশি দিন টিকছে না, তার কারণ বলছে না কেউ। মাদারীপুর সরকারি কলেজ গেট, থানার মোড়, স্টেডিয়াম গেট, ইটেরপুল, নতুন বাসস্ট্যান্ড, খাগদী, মোস্তফাপুর, ডিসি ব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কটির পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দক।

কলা ব্যবসায়ী হাদিম বেপারী বলেন, ‘শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ফোর লেন এখন মরণফাঁদ। আমরা শহরবাসী এর থেকে মুক্তি চাই। এখনই টেকসইভাবে মেরামত করা না হলে - যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

Screenshot_2025-08-02_162346ইজিবাইক চালক রাসেল মাতুব্বর বলেন, ‘বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়েছে। একইসাথে জমেছে পানি। এতে যাত্রী ও চালক সবারই সমস্যা হচ্ছে। যানবাহন উল্টে অনেকেই আহত হচ্ছেন। চলাচল করা এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

পথচারী মো. আলি আজগর বেপারী বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফোরলেন নির্মাণ করলেও এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে রাস্তা। একটু পর পর বড় বড় গর্ত। সড়কের লোকজন মাঝে মাঝে ইট, বালু দিলেও আবারও একই অবস্থা হচ্ছে। এ যেন ভোগান্তির শেষ নেই।’

রিকশা যাত্রী মিরাজ খান বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করাই দায়। সেখানে যানবাহনে চলাচল কষ্টসাধ্য। এগুলো কেউ দেখে না। এতে যাত্রী, পথচারী ও এলাকাবাসী মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকছেন। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।’

মাদারীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান জানান, ‘ভারী যানবাহন চলাচল আর টানা বৃষ্টিতে ফোর লেনের বিভিন্ন স্থানের পিচ উঠে গেছে। ফোর লেন সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প ও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অনুমোদন হলে স্থায়ীভাবে এটি মেরামত করা সম্ভব হবে। এছাড়া ইট, বালু আর সুরকি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে জনসাধারণের ভোগান্তি না হয়।’

প্রতিনিধি/ এমইউ