images

সারাদেশ

বাংলাবান্ধা দিয়ে একজন ফেরত, ৯ জনকে পুশ-ইন বিএসএফের

জেলা প্রতিনিধি

০১ আগস্ট ২০২৫, ০২:৩১ পিএম

ভারতের শিলিগুড়ি থেকে আটক এক বাংলাদেশি তরুণীকে আনুষ্ঠানিকভাবে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। একই সময়ে নারী ও শিশুসহ ৪ জনকে এবং গভীর রাতে আরও ৫ নারীসহ মোট ৯ জনকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্ত এবং গভীর রাতে সদর উপজেলার ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে এই পুশ-ইনের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে সকলকে বিজিবি আটক করে পুলিশের জিম্মায় দিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ হিল জামান।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা সীমান্তে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পপি রায় নামের এক তরুণীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। পপি দীর্ঘ এক বছর শিলিগুড়িতে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন এবং স্থানীয় একটি মন্দিরে কাজ করতেন। সম্প্রতি তাকে আটক করে শিলিগুড়ি পুলিশ বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিএসএফ তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।

তবে একই রাতে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে, মেইন পিলার ৭৩২ এর ৪ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে নারী ও শিশুসহ চারজনকে পুশ-ইন করা হয়। পরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রায় ২ কিমি ভিতরে টহলরত বিজিবি দল আছমা নামের এক নারী ও তার তিন শিশু সন্তানকে আটক করে।

আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা অবৈধভাবে ৭-৮ মাস ধরে ভারতের মুম্বাইয়ে বসবাস করছিলেন। আছমার স্বামী সেলিম মোড়ল একজন ভারতীয় নাগরিক। মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে বিমানে শিলিগুড়ি পাঠায়, পরে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। তারা যশোর জেলার বাসিন্দা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে আরও পাঁচ নারীকে পুশ-ইন করা হয়। নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঘাগড়া বিওপির মেইন পিলার ৭৫৬ এলাকা দিয়ে তাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। এরপর প্রায় ২ কিমি ভিতরে ডাংগিপুকুর বাজার এলাকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাদের আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। পরে বিজিবির ঘাগড়া বিওপি কমান্ডার সেখানে পৌঁছালে চেয়ারম্যান তাদের বিজিবির কাছে না দিয়ে পঞ্চগড় সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। আটকরা যশোর ও ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা।

আটকদের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

পঞ্চগড়-১৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এক নারীসহ চারজনকে অবৈধভাবে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ। আমরা তাদের আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছি। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।’

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ হিল জামান বলেন, ‘পাঁচ নারীকে আটকের পর ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তাদের বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত তিন মাসে ১০ দফায় পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ১৫৭ জনকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ।

প্রতিনিধি/একেবি