images

সারাদেশ

ইমাম মহসীন হত্যার রহস্য উদঘাটন বগুড়া পিবিআই’র

জেলা প্রতিনিধি

২৩ জুন ২০২২, ০৪:২৯ পিএম

জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার মসজিদের ইমাম মহসীন আলী হত্যার সঙ্গে জড়িত শাহিনুর ওরফে শাহীন (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), বগুড়া।

ক্ললেস এ হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় আসামিকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর শাহিনুর ওরফে শাহিন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বেলা ১২টায় পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতার শাহিনুর (৩৩) নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানার চাকরাইল গ্রামের নঈম উদ্দিনের ছেলে। আর নিহত মহসীন আলী (২৬) জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেলগাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। 

গ্রেফতারের পর শাহীনুর জানায়, ১২ বছর সংসার করার পর তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা শাকিলা এক বছর আগে তাকে তালাক দেন। শাহীনুরের সাথে সংসার করা সময়  শাকিলার গর্ভে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ওয়াসিফা নামের সেই কন্যা সন্তান শাহীনুরের কাছে থাকে। স্থানীয় একটি স্কুলে ২য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। এরপর চারমাস আগে পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেলগাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মসজিদের ইমাম মহসীনকে বিয়ে করেন। 

শাহিনুরের সন্দেহ মহসীন তার স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন। এই সন্দেহ থেকে শাহীনুর মহসীন আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহীনুর নিজের নাম পরিচয় গোপন করে মহসীনের মোবাইল ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে তার সাথে যোগাযোগ শুরু করে সখ্যতা গড়ে তোলেন। 

শাহীনুর আরও জানায়, গত ৭ জুন সন্ধ্যায় শাহীনুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কালাই উপজেলার মোলামগাড়ি বাজারে মহসীনের সাথে সাক্ষাৎ করে। সেখানে দুইজনে চা পান করেন এবং বিভিন্ন গল্প করে সময় কাটান।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে শাহীনুর তার বাইকে মহসীনকে নিয়ে মোলামগাড়ি বাজার থেকে করিমপুরগামী রাস্তায় নিয়ে যান। একপর্যায়ে ফাঁকা জায়গায় মোটরবাইক থামিয়ে মহসীনকে নিজের পরিচয় দেন এবং তার স্ত্রী শাকিলাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে বলে দোষারোপ করতে থাকেন। একপর্যায় তার সন্তান ওয়াসিফার উপবৃত্তির জন্য তার মা শাকিলার জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে বলেন। এতে মহসীন আপত্তি জানায় এবং তাৎক্ষণিক তার কাছে নেই বলে জানিয়ে দেন। এ সময় শাহীনুরের কাছে থাকা একটি লোহার পাত দিয়ে মহসীনের মাথার পেছনে আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এ সময় শাহীনুর লোহার পাত দিয়ে মহসীনের মাথায় আরও কয়েকটি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ রাস্তার পার্শ্বে ধানক্ষেতে ফেলে মোটরবাইক নিয়ে চলে যান। 

পরদিন ৮ জুন মহসীনের মরদেহ ধানক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে কালাই থানা পুলিশ উদ্ধার করে এবং থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলী মামলা দায়ের করেন।

পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায় গত মঙ্গলবার (২১ জুন) পিবিআই বগুড়ার সদস্যরা গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকার ছয়দানা হাজিরপুকুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। 

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শাহীনুর ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল। পিবিআইয়ের টিম তার পিছনে লেগে থেকে গ্রেফতার করে।

প্রতিনিধি/এইচই