জেলা প্রতিনিধি
৩০ জুলাই ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
গাজীপুরের টঙ্গীর হোসেন মার্কেটে মহাসড়ক পাশে ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর মৃত উদ্ধার হওয়া ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বৃষ্টির মধ্যেই নিজ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে পুরাতন জামে কবরস্থানে শায়িত করা হয়।
জানাজায় অংশ নেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম পিটু, পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা দোকান মালিক সমিতির সদস্য সচিব সুমন পারভেজ খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ।
নিহত জ্যোতির ভাই আক্তারুজ্জামান শোভন বলেন, ৩৬ ঘণ্টা পর বোনের লাশ ফিরে পেলাম। কী বেদনার ভাষা দেবো!
আর ভাতিজা আশিকুজ্জামান নিশাত বলেন, দুই শিশু সন্তান মা হারাল। নিষ্পাপ এই চোখজোড়া কাঁদছে, অথচ তাদের কান্না থামাবার ভাষা নেই কারও কাছে। এই ম্যানহোল কে দেখবে? কবে মানুষ বাঁচবে নিরাপদ শহরে?
নিহত জ্যোতি চুয়াডাঙ্গা শহরের বাগানপাড়া এলাকার প্রয়াত পৌর কমিশনার মুন্সি ওয়ালিউল্লাহ বাবলুর একমাত্র মেয়ে।
ঢাকার মিরপুরে পরিবারসহ বসবাস করতেন জ্যোতি। কর্মরত ছিলেন ‘মনি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল হেলথ’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে। গত রোববার রাতে টঙ্গীতে চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। রাত ৮টার পর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার (২৭ জুলাই) রাতে অফিশিয়াল কাজে বের হয়েছিল জ্যোতি। রাত সোয়া ৯টার দিকে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় সড়কের পাশের একটি উন্মুক্ত ম্যানহোলে পড়ে যান এক নারী। যিনি পরবর্তীতে জ্যোতি বলেই নিশ্চিত হয় ফায়ার সার্ভিস।
রাতেই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান, যা দুই দিন ধরে চলে। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ার পর সোমবার সকাল থেকে পুনরায় অভিযান শুরু হয়, তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো সাফল্য আসেনি। পরে মঙ্গলবার সকালে শালিকচুড়া বিল থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় জ্যোতির মরদেহ নিজ শহর চুয়াডাঙ্গার বাগানপাড়ায় পৌঁছালে শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি। সবচেয়ে হৃদয়বিদারক দৃশ্য ছিল দুই শিশু সন্তান- আরিয়ান ও আইয়ানের অঝোর কান্না। ‘মা মা’ করে কান্নায় ভেঙে পড়ে দুই নিষ্পাপ সন্তান।
প্রতিনিধি/ এজে