জেলা প্রতিনিধি
২৮ জুলাই ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যার মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে তাকে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় এবং পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে, ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে বিএনপি কর্মী সুজন মালিথা হত্যা মামলায় তানভীর আরাফাতকে গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকে তিনি কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন।
২০২৪ সালের ২ অক্টোবর, নিহত কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি দাবি করেন, তার বাবা কুদরত আলী বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং দলীয় জনপ্রিয়তার কারণে আওয়ামী লীগপন্থী একটি চক্র ও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে।
বাদী অভিযোগ করেন, ২০২০ সালের ২৩ জুলাই গভীর রাতে পুলিশের পোশাক পরিহিত ১০–১২ জন ব্যক্তি কুদরত আলীকে মুন্সিগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ২৫ জুলাই তার লাশ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাওয়া যায়। মরদেহে গুলির চিহ্ন ছাড়াও নির্যাতনের বহু আলামত ছিল বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার পর তারা মামলা করতে চাইলেও তৎকালীন ওসি তদন্ত নিশিকান্ত সরকার হুমকি দেন—মামলা করলে বাদীরও একই পরিণতি হবে। দীর্ঘ সময় নীরব থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় এবং এসপি তানভীর আরাফাত ‘কিলার তানভীর’ হিসেবে এলাকায় পরিচিত থাকায় কেউ সাহস পায়নি। পরে প্রধানমন্ত্রী দেশ ত্যাগ করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা মামলা করি।’
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ জানান, ‘এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সেটি মঞ্জুর করেছেন।’
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয়। ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের রাজনৈতিক সহকর্মী সুজন হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ওই মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০–১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, তানভীর আরাফাতের গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। তিনি কুষ্টিয়ায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে একাধিক বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এসব কারণে তাকে আদালতের কাঠগড়ায়ও দাঁড়াতে হয়েছে এবং বিভাগীয় শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। সর্বশেষ তিনি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন।
প্রতিনিধি/একেবি