জেলা প্রতিনিধি
২৬ জুলাই ২০২৫, ০২:২৫ পিএম
ইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত লামিয়া আক্তার সোনিয়ার মরদেহ সাভারের বিরুলিয়ার বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। এর আগে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত হয় তার মরদেহ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গভীর রাতে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
লামিয়া আক্তার সোনিয়ার মৃত্যুতে শোকাহত এলাকাবাসী। তার বাবা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য বাবুল হোসেন জানান, মাইলস্টোন স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে জায়রাকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন লামিয়া। দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর মেয়ে জায়রাকে অক্ষত অবস্থায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে তুলে দিলেও নিখোঁজ ছিলেন মা সোনিয়া।
এরপর দুর্ঘটনাস্থলে সোনিয়ার এনআইডি কার্ড কুড়িয়ে পান এক ব্যক্তি। তিনি জানান, তাকে দগ্ধ অবস্থায় সেনাবাহিনীর এক অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়েছে।
সোনিয়া উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন। সংসারের কাজের ফাঁকে প্রতিদিন স্কুল থেকে মেয়ে জায়রাকে আনা-নেওয়া ছিল তার রুটিন কাজ।
তার স্বামী আমিরুল ইসলাম জনি বলেন, এত দিন সোনিয়াকে খুঁজে পেতে আমরা পাগলপ্রায় ছিলাম। মেয়ে জায়রা মাকে খুঁজতে থাকে। তাকে কোনো জবাব দিতে পারি না।
সোনিয়ার স্বামী আমিরুল ইসলাম জনি বলেন, সোনিয়া ঘটনার ঠিক একটু আগে মেয়েকে ক্লাসের একটি শিট ঠিক করে আনার জন্য শিক্ষকের কাছে পাঠায়। এর পরপরই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই সোনিয়া মারা যায়।
মেয়ের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মেয়ের চোখের সামনেই মা মারা গেছে। দুইদিন আগে যখন আমরা সোনিয়াকে খুঁজাখুজি করি তখন সে বলে, বাবা আমাদের বাসায় এতো লোক আসে কেন। আমরা যখন তাকে বলি এমনিতেই আসে। তখন সে বলে, বাবা আমি জানি কিসের জন্য আসে, দুইদিন ধরে মনের ভিতর একটা কথা চাঁপা দিয়া রাখছি তুমি কষ্ট পাইবা তাই বলি না। তুমি আম্মুকে খোঁজ কেন। আম্মুকে খুঁজলে পাইবা না। আমি নিজ চোখে দেখছি আম্মু আগুনে জ্বলতাছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর সিআইডি’র পক্ষ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী সোনিয়ার মরদেহ আমাদের কাছে কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
সোনিয়ার বাবা বাবুল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকে মেয়েকে অনেক জায়গায় খুঁজছি। কোথাও পাচ্ছিলাম না। সবশেষে ডিএনএ টেস্টের জন্য সিআইডির কাছে গিয়ে রক্ত দিয়েছি। এরপর ঢাকা সিএমএইচ থেকে মেয়ের লাশ পাই। তাঁর শরীর তিন-চার টুকরো হয়ে গেছে।
প্রতিনিধি/এজে