জেলা প্রতিনিধি
২৫ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৩ পিএম
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ছাত্রী রাইসা মনির দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজার নামাজ শেষে বাজড়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব থেকে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাইসা মনি ও ওই দুর্ঘটনায় নিহত আরও চারজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পরে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হলে রাতেই তারা ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ভোররাতে আলফাডাঙ্গার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
১১ বছর বয়সী রাইসা মনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনেরা।
রাইসা মনির বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, ‘বিমান বিধ্বস্তের পরদিন, ২২ জুলাই, সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের সদস্যরা আমাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে রাইসা মনির মরদেহ শনাক্ত হওয়ার পর তা আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই আমরা রওনা দিয়ে ভোররাতে বাড়িতে পৌঁছাই। এরপর শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জানাজার পর তাকে দাফন করা হয়।’
তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল মেঝো। তার বড় বোন সিনথিয়া (১৩) অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট ভাই রাফসান শেখ (৪) বয়সে এখনো শিশু। মেয়ের মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন বাবা শাহাবুল শেখ ও মা মিম আক্তার।
পরিবারসূত্রে জানা গেছে, ছেলেমেয়েকে ভালো শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করান। রাইসা মনি তৃতীয় শ্রেণিতে এবং তার বড় বোন সিনথিয়া অষ্টম শ্রেণিতে ওই স্কুলেই অধ্যয়ন করছিল।
স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘রাইসা মনির অকাল মৃত্যুতে পুরো এলাকাবাসী শোকাহত। মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এমন কোনো মানুষ ছিল না, যে চোখের পানি ধরে রাখতে পেরেছে।’
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। সরকারি হিসেবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ৬৯ জন। সারা দেশে এ ঘটনা শোকের ছায়া নামিয়ে দিয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি