জেলা প্রতিনিধি
১১ জুলাই ২০২৫, ১১:২৪ এএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দে ভরা মহাসড়কের এই অংশে যানবাহনের গতি অত্যন্ত ধীর হয়ে পড়েছে, কোথাও কোথাও একেবারে থেমে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই আশুগঞ্জ ও বিশ্বরোড মোড় এলাকার রাস্তার অবস্থা নাজুক। কোথাও কোথাও গভীর গর্তের কারণে যানবাহনের চাকা আটকে যাচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
বাসচালকের অভিযোগ
মামুন পরিবহনের বাসচালক মো. লিয়াকত বলেন, ‘রাস্তার ভাঙার কারণেই এই যানজট। আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও বিশ্বরোড মোড়ে রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, গাড়ি উল্টে যেতে পারে। আমি রাত ২টায় শাহবাজপুর এসেছিলাম, ৮ ঘণ্টায় মাত্র ৫ কিলোমিটার এসেছি। আমরা চাই, রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হোক, না হলে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়বে।’
ট্রাকচালক ভুষণ দেব বলেন, ‘রাত ১০টায় আশুগঞ্জ এলাকায় যানজটে পড়েছি। ধীরে ধীরে জ্যাম ছাড়ছে। প্রায়ই এই রকম জ্যামে পড়তে হয়। রাস্তা দ্রুত সংস্কার করতে হবে।’
পরীক্ষা মিস করলেন যাত্রী
যাত্রী মো. শামীম বলেন, ‘গতকাল রাতে রওনা দিয়েছিলাম। আজ ঢাকায় উপ-সহকারী কৃষি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যানজটে আটকে থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। দুই ঘণ্টা ধরে রাস্তায় হেঁটে চলেছি। রাস্তার কাজ হবে শুনে যাচ্ছি অনেক দিন ধরে, কিন্তু এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি।’
আরেক যাত্রী মিরা বেগম বলেন, ‘পুরুষ যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা নারী যাত্রীরা গাড়ির ভেতরেই বসে আছি। রাত থেকে জ্যামে আটকে আছি, খুব কষ্ট হচ্ছে। কেউ কি দেখছে না আমাদের কষ্ট?’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান বলেন, ‘আমি আশুগঞ্জ গোলচত্বর প্রান্তে আছি। দুই দিকেই ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। রাস্তার নাজুক অবস্থার পাশাপাশি ছোট ছোট তিন চাকার যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণেও ভোগান্তি বেড়েছে।’
প্রকল্পে বিলম্বের কারণ
নির্মাণাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্যাকেজ-১ এর আওতায় আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, ‘প্যাকেজ-১-এ কিছু পরিবর্তন এসেছে এবং ভারত সরকারের অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হওয়ায় কাজ বিলম্বিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের প্রস্তুতিতে রয়েছে। এরপরই কাজ পুরোদমে শুরু হবে। আমরা নিয়মিত সংস্কারের চেষ্টা করছি, তবে বৃষ্টির কারণে তা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’
প্রতিনিধি/একেবি