জেলা প্রতিনিধি
০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম
গত বছরের বন্যা ও সাম্প্রতিকালের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়কটি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এতে যানবাহনের ক্ষতির পাশাপাশি আহত হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। বিভিন্ন সময় এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দারে দারে ঘুরেও সড়কটি মেরামতে কোনো আলোর মুখ দেখেনি ইউনিয়নবাসী। সাম্প্রতি শানিমা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের অর্থায়নে ও সেচ্ছাশ্রমে প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করছে স্থানীয় লোকজন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নোয়াখালী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেগমগঞ্জ উপজেলার সরুগো পোল হয়ে দূর্গাপুর ইউনিয়নে যাওয়ার প্রধান সড়ক। এ সড়ক দিয়ে শুধু দূর্গাপুর ইউনিয়নের লোকজন নয়, যাতায়ত করে পাশ^বর্তী সোনাইমুড়ী ও সেনবাগ উপজেলার লোকজন। এ সড়কটি গিয়ে মিলেছে সরুগো পোল-বোর্ড অফিস, কুতুবপুর, রাজাপুর, আবদুল্যারহাট, দীঘিরজান ও নাটেশ^র এলাকায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় এটি দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের বন্যা ও চলতি বছরের ভারী বৃষ্টিপাতে ৫কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৩কিলোমিটার খানাখন্দে ভরে গেছে, এরআগেও সড়কটি ভাঙাচুর ছিল। ছোট-বড় গর্ত আর ভাঙাচুরা সড়কে দীর্ঘ ১ বছরের বেশি সময় ধরে দূর্ভোগে পড়েছেন সড়ক ব্যবহারকারী লোকজন। এরইমধ্যে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার গিয়েও সড়কটি মেরামতের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। পরবর্তীতে উপজেলার বাসিন্দা শামীমা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের সহযোগিতায় সেচ্ছাশ্রমে সড়কটির মেরামতের কাজ করছেন স্থানীয় লোকজন।
মাহমুদুল হাসান নামের একজন পথচারী বলেন, সড়কটির বেশির ভাগ অংশ যে পরিমাণ গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা যারা এ পথে সিএনজি বা অটোরিকশায় যাতায়ত করি তাদের প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সড়কটি দিয়ে একবার যাতায়ত করলে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া প্রতিদিনই এ সড়কের বিভিন্ন ভাঙা অংশে যানবাহন উল্টে দূর্ঘটনা ঘটছে। সবশেষ গত শনিবার দুপুরে একটি রং বাহী গাড়ি গর্তের মধ্যে উল্টে পাশ^বর্তী পুকুরে পড়ে যায়। পরে লোকজনের সহযোগিতায় আহত চালক ও হেলফারকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে প্রতিদিন এ সড়কে চলাচলে আমাদের কষ্ট করতে হবে। তাই সাহাব উদ্দিনের সহযোগিতায় আমরা নিজেরা সেচ্ছাশ্রম দিয়ে সড়কটির ভাঙা অংশগুলো মেরামত শুরু করেছি। গত কয়েকদিন ধরে ইটের, বালি এবং সিমেন্ট দিয়ে আমরা সড়কটি মেরামত করে যাচ্ছি। তবে আমরা সড়কটি স্থায়ী মেরামতের জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
সাহাব উদ্দিন জানান, সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমাদের কষ্ট আরও বাড়বে। তাই আমি যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি নিজেরাই রাস্তা ঠিক করার। আমাদের এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এলাকার আরও অনেক যুবক স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নিচ্ছেন। তারা ইটের টুকরা, বালি এবং সিমেন্ট ব্যবহার করে রাস্তাগুলোর গর্ত ভরাট করছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, মেরামত যোগ্য সড়কগুলোর তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। তালিকা তৈরি হলে সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রেরণ করা হবে। বরাদ্দ আসলে কাজ শুরু করা যাবে।
প্রতিনিধি/ এজে