জেলা প্রতিনিধি
০৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৬ এএম
কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বারেশ্বর ফরিদ উদ্দিন ডাক্তার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০টি দোকান পুড়ে গেছে, আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকারও বেশি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মার্কেটের মাহবুবের ফলের দোকান ও আবু খায়েরের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকানগুলোতেও।
খবর পেয়ে বুড়িচং ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এবং স্থানীয় লোকজন প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবু খায়ের ট্রেডার্সে গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা, নগদ টাকা মিলিয়ে ক্ষতি প্রায় ১৫ লাখ টাকা, মাসুদ স্টোরে প্রায় ১৫ লাখ টাকা, মহসিন ট্রেডার্সে ১৫০ বস্তা চাল ও সারসহ ক্ষতি প্রায় ৭ লাখ টাকা, সুমন স্টোরে ক্রোকারিজ ও মুদি মালামাল মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকা, কামরুল হাসান মেকানিক্যাল ফ্রিজ মেরামত দোকানে ৩ লাখ টাকা, হাসান ভূঁইয়া ইলেকট্রনিক্সে ১০ লাখ টাকা, চন্দন শীলের সেলুনে ৩ লাখ টাকা, মনির হোসেনের হোমিওপ্যাথিক দোকানে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী মিজান ও বজলু মিয়ার ইলেকট্রনিক্স দোকানে প্রায় ৫ লাখ টাকা, মারিয়া খেলা ঘর অ্যান্ড ফ্যাশন ৬ লাখ টাকা, ইকবাল কনফেকশনারিসহ অন্যান্য দোকানে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী গোলাম কিবরিয়া, কাউছার নয়নসহ অনেকেই জানান, অগ্নিকাণ্ডে গ্যাসের দোকান, পাইকারি চাল ও সারের দোকান, খেলার সামগ্রী, ক্রোকারিজ, ইলেকট্রনিক্সসহ অন্তত ১০টি দোকান পুড়ে গেছে।
ফল দোকানদার মাহবুব বলেন, ঘটনার সময় আমি কুমিল্লা শহরে ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসি, এসে দেখি আমার লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা তিন ভাই ২৫ বছর ধরে এই মার্কেটে ব্যবসা করছি।
প্রতিবন্ধী মিজান কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার দুই পা নেই, ইলেকট্রনিক্স মেরামত করে কোনোমতে সংসার চালাতাম।
এখন দোকানটিও শেষ। স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে বাঁচব কীভাবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা দরকার।
বুড়িচং ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন জানান, তিনটি ইউনিট নিয়ে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। আগুনে ১০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পরে জানানো যাবে।
এ বিষয়ে ইউএনও তানভীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর তালিকা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/ এজে